আরিফ সবুজ | নোয়াখালী
স্বামীর মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার চর অষ্টদর ইউনিয়নের আদর্শ গ্রামের মৃত ছৌহর উদ্দিনের স্ত্রী জুলেখা বেগম। বাড়িঘর ছেড়ে প্রায়শ ভবঘুরের মতো চষে বেড়ান তিনি। সন্তানরা দিনশেষে খুঁজাখুঁজি করে বাড়িতে নিয়ে আসেন জুলেখা বেগমকে ।
স্বামীর মৃত্যুর বছর দুয়েক পরে ঘরছাড়া হন জুলেখা। বহু খুঁজেও সন্তানরা দেখা পাননি মায়ের। মাইকিং সহ বহুভাবে খুঁজে হাল ছেড়েছেন মা জুলেখা বেগমের। তিন ছেলে আর একমাত্র কন্যার জননী জুলেখা বেগম একসময় হাটতে হাটতে ঠাঁই নেন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মেঘনা তীরবর্তী নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সোলেমান বাজার নামক স্থানে।
নানা প্রতিকুলতা আর কষ্টক্লেশে তিনবছর বাজারের অলিতে গলিতে কেটেছে তার। এরমধ্যে মানিক হাসান অরণ্য নামে এক যুবকের নজরে আসে মহিলাটি। নাম এবং পরিচয় জানতে চাইলে গ্রাম আর ছেলেমেয়ের নাম বললে বিষয়টি সোশ্যাল মিড়িয়ায় তুলে ধরেন অরণ্য।
পরে বিষয়টি ভাইরাল হলে নজরে আসে নোয়াখালী এবং শেরপুর জেলার গণমাধ্যম কর্মীসহ নানা পেশার মানুষের। এরমধ্যে পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করে মানিক হাসান অরণ্য।
যোগাযোগের মাধ্যমে মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মায়ের উদ্দেশ্যে নোয়াখালীতে অরণ্যের কাছে পৌঁছান সন্তানরা। পরেরদিন বুধবার স্থানীয় সংবাদকর্মী ইউনুস শিকদার, আরিফ সবুজ এবং স্থানীয় প্রশাসনের আয়োজনে এলাকাবাসীর সহায়তায় মাকে সন্তানদের নিকট তুলেদেন মানিক হাসান অরণ্য।
এসময় জুলেখা বেগমের ছেলে রফিকুল ইসলাম এবং মোস্তাহান মাকে ফিরে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা তাদের মাকে ফিরে পাওয়ায় এ কাজে সংশ্লিষ্ট মানিক হাসান অরণ্যসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এবং মা জুলেখা বেগমের জন্য দুআ কামনা করেন।
মহিলার নাতি (ছেলের পুত্র) আব্দুল খালেক জানান, বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে তাদের দাদীকে নিয়ে বাড়িতে পৌঁছেছেন তারা। খালেক জানান, বাড়িতে পৌঁছে আত্মীয় স্বজনসহ সবাইকে ছিনতে পারছেন জুলেখা বেগম।
এবিষয়ে চরজব্বার থানাধীন স্থানীয় সোলেমান বাজারস্থ চনখোলা পুলিশ ক্যাম্পের আই সি মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, সকল কিছুর সত্যতা নিশ্চিত করে জুলেখা বেগমকে তার সন্তানদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।