কোটা সংস্কার আন্দোলনে ফের বাংলা ব্লকেড ঘোষণা

0
79

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে এক দফা দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে।

বুধবার সারাদেশে তৃতীয় দিনের মতো ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন শেষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এর আগে সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, ফার্মগেট, চানখারপুল, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার মোড়, গুলিস্তান, সায়েন্সল্যাবসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে অবরোধ তুলে নেন তারা।

কর্মসূচি ঘোষণা করে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের আগামীকালের (বৃহস্পতিবার) কর্মসূচি হিসেবে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবে। সড়ক ও রেলপথগুলো এই কর্মসূচির আওতায় থাকবে। আমরা নির্বাহী বিভাগকে বলতে চাই অতি দ্রুত আমাদের দাবিটি মেনে নেন, যাতে আমরা পড়ার টেবিলে ফিরতে পারি।

আসিফ আরও বলেন, ২০১৮ সালে যে পরিপত্র দেয়া হয়েছিল হাইকোর্ট সেটি বাতিল করেছে। আমরা এই আইনের প্রক্রিয়ায় হাইকোর্টের বারান্দায় যেতে চাই না। আমরা আমাদের রুটিন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই। যতদিন না আমাদের দাবি মেনে নেয়া হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা যে এক দফা দাবি জানিয়েছি সে ব্যাপারে সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য আসতে হবে। একটি কমিশন গঠন করে এই কোটা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।

আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম, সব গ্রেডে আইন পাস করে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবি জানিয়েছি আমরা। ২০১৮ সালের পরিপত্রে কোন কোটাই নেই। কোটা নিয়ে কয়েক বছর পরপর শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও হাইকোর্ট সেটি অবৈধ ঘোষণা করতে পেরেছে। ত্রুটিযুক্ত পরিপত্র পরিপত্র খেলার একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। এর স্থায়ী সমাধান তখনই হবে যখন জাতীয় সংসদ থেকে আইন পাস করে বাস্তবায়ন করা হবে। নির্বাহী বিভাগ যদি চায় তবে আজকে আমাদের শেষ সংবাদ সম্মেলন হবে।

কী স্টেপ নিলে তারা রাজপথে নামবে না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যদি নির্বাহী বিভাগ থেকে একটি আদেশ জারি করে বা একটি ত্রুটিহীন পরিপত্র জারি করা হয় তবে আমাদের রাজপথে আর দেখবেন না। ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ ৫% কোটার কথা প্রস্তাব করেছি। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে ৷ কোনোভাবেই নাতিপুতি নামক পোষ্যকোটা ছাত্রসমাজ মানবে না। যাদের কাছে আমাদের দাবি তারা যদি দেখেও না দেখার ভান করে তবে আমরা বলবো তারাই চাচ্ছেন আমরা যেন রাজপথে অবস্থান করি।

প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি হলো : সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে (সর্বোচ্চ ৫%) এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here