প্রযুক্তির অন্যতম আশীর্বাদ মোবাইল ফোন। এখন ছোট বড় প্রায় সবার হাতেই রয়েছে মোবাইল ফোন। এই ডিভাইসটি মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করে দিয়েছে। তবে এর অপব্যবহার হলে ভোগান্তিতেও পড়তে হয় ব্যবহারকারীকে।
তেমনি একটি ভোগান্তি বা সমস্যা হলো ট্র্যাকিং। এর শিকার হলে গোপন বলে আর কিছুই থাকে না। কেউ যদি আপনার মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তাহলে নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা হুমকির মুখে পড়ে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত। এক্ষেত্রে কিছু ধাপ অনুসরণ করে নিশ্চিত হতে হবে সত্যিই ফোন ট্র্যাকিং করা হচ্ছে কি না।
ট্র্যাকিং হচ্ছে কি না বুঝবেন কীভাবে
নোটিফিকেশন প্যানেলে ডিভাইস লোকেটেড লেখা কোনো নোটিফিকেশন আসে কি না চেক করুন। ফাইন্ড গুগল ছাড়া স্ট্যাটাস বারে লোকেশন ইনফরমেশন আইকন দেখা যায় কি না খেয়াল করুন। ট্র্যাকিং হচ্ছে কি না জানতে বিভিন্ন কোড ডায়াল করে দেখতে পারেন। যেগুলো ফোন ট্র্যাকিং করা হলে সম্ভাব্য কিছু প্রতিক্রিয়া দেখাবে। যেমন *# ৬১# লিখে ডায়াল করলে ইনকামিং কলগুলো অন্য কোনো নম্বরে ফরওয়ার্ড করা হয় কি না, তা জানাবে। একইভাবে *# ৬২# ডায়াল করে দেখা যাবে, কোনো ডাইভারশন সফটওয়্যার বিভিন্ন কল ও টেক্সটকে আপনার কাছে পৌঁছাতে বাধা দেয় কি না। ফোনের ব্যাটারি দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে কি না তা লক্ষ্য করুন। যদি তা হয়, তাহলে ফোন হয়তো আপনার অবস্থান সংগ্রহ করতে অনেক বেশি শক্তি ব্যবহার করছে। এরপরও যদি মনে করেন নিরাপত্তা হুমকির মুখে, তাহলে স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করুন।
প্রতিরোধে করণীয়
ট্র্যাকিং থেকে বাঁচতে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সব সময় লোকেশন বার বন্ধ করে রাখতে হবে। ফোনের জিপিএস অপশনটি বন্ধ করে রাখতে হবে। যদি আসে, তাহলে ফোনে লগইন করা জি-মেইলের পাসওয়ার্ড বদলে ফেলুন। যদি ফাইন্ড গুগল ছাড়া স্ট্যাটাস বারে লোকেশন ইনফরমেশন আইকন দেখা যায়, তাহলে বুঝবেন আপনার মোবাইল ফোনের সেটে স্পাই অ্যাপ আছে। সমাধান পেতে, ফোনের ডেভেলপার অপশনে চলে যান। সেখান থেকে রানিং সার্ভিস অপশনে গিয়ে সন্দেহজনক কোনো অ্যাপ চোখে পড়লে সোজা আন-ইনস্টল করে দিন।
ট্র্যাকিং হওয়ার বিষয় একবার নিশ্চিত হয়ে গেলে ফোনের সেটিংসে যান এবং ‘লোকেশন’ সেটিংস অফ করে দিন। এটি ফোনকে আপনার অবস্থান সংগ্রহ করা বন্ধ করতে সাহায্য করবে।
এ ছাড়া নিরাপদ থাকতে ফোনকে ট্র্যাকিং থেকে রক্ষা করার জন্য একটি লক স্ক্রিন ব্যবহার এবং শক্তিশালী পাসওয়ার্ড বা ফাংশনাল প্যাটার্ন দিয়ে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করুন।
ফোন রুট করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ, অনেক সময় রুটের মাধ্যমে ফোনের এক্সেস পেয়ে যায়, এতে ফোনের তথ্যাদি চুরি হতে পারে।
অনাকাঙ্ক্ষিত মেসেজ, যেমন স্প্যাম বক্সের জমা করা মেসেজ খোলা থেকে বিরত থাকুন। কোনো লিংক থেকে সফটওয়্যার ডাউনলোড করা উচিত নয় এবং কোনো ধরনের সফটওয়্যার ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে গুগল প্লে স্টোর ব্যবহার করুন।
চাইলে ডিভাইসে একটি ভিপিএন ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার ইন্টারনেট ট্রাফিকটিকে এনক্রিপ্ট হবে এবং আপনার অবস্থান গোপন রাখতে সাহায্য করবে।