ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের একটি অধ্যায়ে হিজড়া জনগোষ্ঠী সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক একটি নিবন্ধ নিয়ে ‘ধর্মের অপব্যাখ্যা’ দেয়া তাকে গ্রেফতারের দাবি জানায় জাসদ।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) এক বিবৃতি দিয়ে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এ দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেছেন, সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠ্যপুস্তকে ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া বিষয় নিয়ে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। তিনি বিজ্ঞানশিক্ষার বিরোধিতাকারী এবং ধর্মের অপব্যবহার করে উসকানি দিয়ে উত্তেজনা ও অশান্তি সৃষ্টি করছেন।
তারা আরও বলেন, অতীত থেকে ধর্মের অপব্যাখ্যা, অপব্যবহারকারীরা বিজ্ঞানশিক্ষার বিরোধিতা করে মুসলমানদের বিজ্ঞান ও যুক্তির পথ থেকে সরিয়ে অন্ধ ও কূপমণ্ডূক বানানোর অপ্রয়াস চালিয়ে আসছেন। তারা তাদের ধর্ম ব্যবসায়ের প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে বিজ্ঞানশিক্ষা ও যুক্তিকে প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে আসছেন।
সম্প্রতি একটি শিক্ষা সেমিনারে পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাইয়ের অভিযোগ তোলেন মাহতাব। এ সময় তিনি সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের ৮০ টাকা দিয়ে বইটি বাজার থেকে কিনতে বলেন। পরে বইয়ের ট্রান্সজেন্ডারের গল্প থাকা দুটি পাতা ছিঁড়ে আবার দোকানে ফেরত দেয়ার পরামর্শ দেন এই শিক্ষক।
এই ঘটনার পর রোববার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মাহতাব লেখেন, ‘আজকে আমি ব্র্যাকে রেগুলার ক্লাস নিয়েছি। আমাকে এইমাত্র ফোন করে জানানো হয়েছে যে, আমি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ক্লাস নিতে না যাই। আমি জানি না হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত তারা কেন নিল। আমাকে কোনো কারণ তারা দেয়নি।’
তবে ট্রান্সজেন্ডার গল্প ‘শরীফ থেকে শরীফা’ প্রসঙ্গে নেতিবাচক বক্তব্য দেয়া আসিফ মাহতাবের প্রসঙ্গে বক্তব্য জানিয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আসিফ মাহতাব উৎস ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তার সাথে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কোনো চুক্তি নেই। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার কর্মী এবং তাদের চুক্তির গোপনীয়তা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্যাম্পাসে সবার মাঝে সহযোগিতামূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করে।