মাথাব্যথা কি ব্রেন টিউমারের লক্ষণ?

0
20

মাথা ব্যাথা হয় না এমন মানুষ নেই। কম-বেশি সবার মাথাব্যথা হয়। অনেকের অল্পতেই মাথা ব্যাথা সেড়ে যায় আর কারও দীর্ঘস্থায়ী হয়। অনেক সময় আবার সেই ব্যথাও তীব্র হয়ে থাকে। ব্যথা তীব্র হলে দেখা যায় অনেকেই ওষুধ খান। কিন্তু ব্যাথা কেন হয় সেটা অনেকেই জানে না।

মাথাব্যথা যদি অল্পতেই দূর না হয় তাহলে সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ মাথাব্যথা হতে পারে আপনার ব্রেন টিউমারের (মস্তিষ্কের টিউমার) লক্ষণ। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসা করানো জরুরি। টিউমারের কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা প্রাথমিকভাবে মাথাব্যথার মাধ্যমে জানান দিয়ে থাকে রোগীকে। যদিও মাথাব্যথা ছাড়াও শরীরে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস এক প্রতিবেদনে ব্রেন টিউমারের লক্ষণ, ঝুঁকি ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানিয়েছে। এবার তাহলে প্রতিবেদন অনুযায়ী এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।

ব্রেন টিউমারের লক্ষণ: ব্রেন টিউমারের লক্ষণগুলো সাধারণত মস্তিষ্কের অংশের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তন হয়। সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, খিঁচুনি হওয়া, ধারাবাহিকভাবে অসুস্থ বোধ করা যেমন বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া ও তন্দ্রা; মানসিক বা আচরণগত পরিবর্তন যেমন ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন বা স্মৃতি সমস্যা; শীরের একপাশ ক্রমশ দুর্বল হওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া ও দৃষ্টিতে সমস্যা হওয়া। তবে অনেক সময় প্রাথমিক এই লক্ষণগুলো নাও দেখা দিতে পারে এবং সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে বা হঠাৎ করেই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ব্রেন টিউমারের ধরন: সাধারণত মস্তিষ্কের টিউমারের বৃদ্ধির সময় এবং চিকিৎসার পর পুনরায় বৃদ্ধির সম্ভাবনা কতটুকু, তার উপর নির্ভর করে এর গ্রেড বা ধরন নির্ধারণ করা হয়। গ্রেড ১ ও ২ হচ্ছে টিউমারের নিম্ন ধরনের এবং ৩ ও ৪ হচ্ছে উচ্চমাত্রার টিউমার।

ক্যানসারযুক্ত (ম্যালিগন্যান্ট) ব্রেন টিউমার: এই জাতীয় টিউমার হচ্ছে গ্রেড ৩ ও ৪। যা প্রাথমিকভাবে মস্তিষ্কে শুরু হয় বা শরীরের অন্য কোথাও থেকে মস্তিস্কে ছড়িয়ে পড়ে (সেকেন্ডারি টিউমার)। এ ধরনের টিউমার হলে চিকিৎসার পরও ফের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ক্যানসারবিহীন (বেনাইন) ব্রেন টিউমার: এটি হচ্ছে গ্রেড ১ ও ২ মানের টিউমার। এই টিউমার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং চিকিৎসার পর পুনরায় ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।

ঝুঁকি: বয়সের সঙ্গে ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি বাড়ে যেমন, ৮৫ থেকে ৮৯ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে ব্রেন টিউমারের সম্ভাবনা বেশি থাকে। যদিও কিছু ধরনের ব্রেন টিউমার শিশুদেরও হয়ে থাকে। রেডিয়েওশনও কিছু সংখ্যক ব্রেন টিউমারের জন্য দায়ী। বিশেষ করে যাদের রেডিওথেরাপি রয়েছে, তাদের মধ্যে এই ধরনের টিউমার দেখা যায়; যদিও এর হার খুব কম।

পারিবারিক ইতিহাস ও হরমোনগত কারণেও ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি থাকে। টিউবারাস স্ক্লেরোসিস , নিউরোফাইব্রোমাটোসিস টাইপ ১ , নিউরোফাইব্রোমাটোসিস টাইপ ২ এবং টার্নার সিন্ড্রোম থাকা মানুষের এই টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে যখন: ব্রেন টিউমারের কোনো লক্ষণ যদি নিজের বা কাছের কারও মধ্যে বুঝতে পারেন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি। বিশেষ করে যদি মাথাব্যথা থাকে, যা সাধারণ মাথাব্যথার থেকে আলাদা মনে হলে বা ব্যথা তীব্র হলেও চিকিৎসক দেখাতে হবে। এ ধরনের লক্ষণ থাকলেই যে ব্রেন টিউমার, তা কিন্তু নয়। তবে লক্ষণগুলো থাকলে অবশ্যই চিকিৎসক দেখানো উচিত। বে সমস্যা শনাক্ত ও নিশ্চিতের জন্য মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিশেষজ্ঞের (নিউরোলজিস্ট) পরামর্শ নিতে পারেন।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here