বিশ্বের কোনো প্রান্তে কিছু ঘটলেই ‘অতি উৎসাহ’ নিয়ে এগিয়ে আসে পশ্চিমা বিশ্ব। দেশে দেশে তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপও অজানা নয়। কিন্তু হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে যেন ‘রহস্যজনক নীরবতা’ পালন করছেন পশ্চিমা নেতারা। এত বড় ঘটনায় তাদের এমন নীরবতা কেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, বেলজিয়ামে আজ সোমবার (২০ মে) জাতীয় ছুটির দিন। এই কারণে রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় ইউরোপ থেকে প্রতিক্রিয়া আসছে না বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তবে গত সপ্তাহে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর ওপর হামলার ঘটনার পর যত দ্রুত প্রতিক্রিয়া আসে, তার সঙ্গে তুলনা করলে ইরানের ঘটনা সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী।
এই ঘটনাকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের টানাপোড়েনের বড় প্রমাণ হিসেবে দেখছেন অনেক বিশ্লেষক।
আল জাজিরা জানিয়েছে, শুধুমাত্র ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমিরাবদুল্লাহিয়ান এবং দুর্ঘটনায় পড়া হেলিকপ্টারে থাকা অন্যান্যদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এটি মূলত, রোববার (১৯ মে) রাতে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির সন্ধানে সহায়তা করার জন্য ‘র্যাপিড রেসপন্স ম্যাপিং সিস্টেম’ সক্রিয় করতে ইরানের এক অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় কমিশনের সাড়া।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপীয় কমিশন ইরানের অনুরোধে সাড়া দিয়েছে ঠিকই, তবে রাইসিসহ অন্য কর্মকর্তাদের মৃত্যুর খবর আসার পর। তবে এর মধ্য দিয়ে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক সত্ত্বেও ইইউ এবং ইরানের মধ্যে এখনও কূটনৈতিক চ্যানেল খোলা রয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, ব্রাসেলসে এখন ‘অদ্ভূত এক নীরবতা’ বিরাজ করছে। ইউরোপীয় নেতারা ইরানের পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
উল্লেখ্য, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ দুর্ঘটনায় পড়া হেলিকপ্টারের সব যাত্রী মারা গেছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রোববার (১৯ মে) বিকেলে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয় প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ানকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি।
প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ানের পাশাপাশি হেলিকপ্টারটিতে ইরানের আরও বেশ কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তাও ছিলেন।