ইব্রাহিম খলিল শিমুল।।
মুসলমান সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এ ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে সুবর্ণচরের বিভিন্ন হাট-বাজারে দা, ছুরিসহ লোহার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত স্থানীয় কামারেরা। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাঁদের কর্মব্যস্ততা। উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাজারেই আছে কামারের দোকান। এ পেশার মানুষ সারা বছর কমবেশি লোহার কাজ করলেও ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে তাঁদের কর্মব্যস্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা গেছে, কয়লা আর লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় দা, ছুরিসহ লোহার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরিতে তাঁদের লাভের পরিমাণ আগের চেয়ে কমেছে। তারপরও তাঁরা তাদের পূর্বপুরুষের পেশা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।
কামারের দোকানে কোরবানির সরঞ্জাম কিনতে আসা ক্রেতা জাহিদুল ইসলাম, মো. মিজানুর রহমান ও মো. হাবিব উল্যাহ বলেন, কোরবানি ঈদের আর মাত্র ২ দিন বাকি। তাই আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার কাজটি সেরে ফেলছি।
তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, বঁটির দাম একটু বেশি।’ চরবাটা খাসেরহাট বাজারের কামার বিটুল মজুমদার বলেন, প্রতিবছরই কোরবানির ঈদে দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতিসহ লোহার বিভিন্ন জিনিসের চাহিদা বেড়ে যায়। এবার কয়লার ও লোহার দাম বেশি। মালামালের দাম বেশি, তাই ক্রেতা একটু কম। তবে কোরবানির ঈদ ঘিরে ভালো আয়-উপার্জন হচ্ছে। এবং আগামী ২ দিনে আরো ব্যস্ততা বাড়বে। সেই সাথে আরো উপার্জনও বৃদ্ধি পাবে।
বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, কামারেরা দোকানের সামনে শাণ দেওয়া নতুন দা, বঁটি, ছুরি ও চাকু সাজিয়ে রেখেছেন। ভেতরে চলছে কাজ।
কামারেরা জানান, দা আকৃতি ও লোহা ভেদে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা, ছুরি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা, চাকু প্রতিটি সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, হাড় কোপানোর চাপাতি প্রতিটি ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং পুরোনো দা, বঁটি, ছুড়ি শাণ দিতে বা লবণ-পানি দিতে ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়।
চরবাটা খাসেরহাট বাজারের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্যাহ (শিবলু) বলেন, অনেকে পূর্বপুরুষের পেশাকে ধরে রেখে এখনো কামারের কাজ করছেন। লোহার তৈরি জিনিসের দাম বেড়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি বের হওয়ার এ শিল্প আগের মতো নেই। যদি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পায় এ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।