ঋতুগত কারণে এখন শীতকাল। আর শীত শুরু হতেই প্রায় অধিকাংশ মানুষই জ্বর-সর্দি-কাশির মতো সমস্যায় ভুগছেন। এ সময় সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় জ্বর হলে। কেননা, জ্বর হলে অনেকেরই ঠোঁটে ফুসকুড়ি বা জ্বরঠোসা দেখা দেয়।
ঠোঁটে বা এর আশপাশে হওয়া ফুসকুড়িকেই আমরা জ্বরঠোসা বলে থাকি। জ্বরঠোসা হলে তীব্র ব্যথা ও চুলকানি হয়। আবার ক্ষত স্থান লাল হয়, ফুলে যায়। এ সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ফিভার ব্লিস্টার।
স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ প্রদান করা ওয়েবসাইট হেলথলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতে ফিভার ব্লিস্টারের কারণ হচ্ছে এইচএসভি ১ সংক্রমণ। এ সংক্রমণ হলে জ্বর হয়ে থাকে। আবার জ্বর থেকেও ফিভার ব্লিস্টার হয়ে থাকে। সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে বা দুর্বল হলে জ্বরঠোসা সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিন সি ও ডি-এর ঘাটতি হলেও হতে পারে এ সমস্যা।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই আক্রান্ত হয়ে থাকেন এইচএসভি ১ সংক্রমণে। এটি সুপ্ত অবস্থায় থাকে। প্রথমবার হওয়ার পর স্নায়ুকোষে অন্তর্নিহিত থাকে এইচএসভি ১। যা পরবর্তীতে ফের প্রকাশ পায়।
জ্বরঠোসা সারাতে করণীয়: জ্বরঠোসা হলে তা থেকে সেরে উঠতে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। তবে শুরুতে ঘরোয়া উপায় কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন।
টি ট্রি অয়েল: এই তেল বিভিন্ন ধরনের ব্যথা কমাতে কাজ করে। জ্বরঠোসায় ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে প্রথমে তুলো দিয়ে একটি বলের মতো বানিয়ে এ তেল কয়েকবার লাগিয়ে দিন জ্বরঠোসায়। এভাবে প্রতিদিন করতে থাকুন। অল্পতেই উপকার পাবেন।
ক্রিম ব্যবহার: ২০০১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, জিংক অক্সাইড ও গ্লাইসিনযুক্ত ক্রিম প্লেসবো ক্রিমের তুলনায় ক্ষত ঠিক করতে ভালো কার্যকর। এছাড়া এক গবেষণায় দেখা গেছে, হারপিস সিমপ্লেক্স সংক্রমণকে কোষে প্রবেশ করতে বাঁধা প্রদানে ভূমিকা রাখে জিংক অক্সাইড। এ জন্য অবশ্যই আপনাকে জিংক সালফেট সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে। আর সাময়িক সমস্যায় দিনে চারবার করে জিংক অক্সাইড ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন ক্ষত স্থানে।
অরিগানো অয়েল: হারপিসসহ নানা ধরনের সংক্রমণকে বাধা প্রদানে বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করে অরিগানো অয়েল। জ্বরঠোসার সমস্যায় ক্ষত স্থানে পাতলা করে অরিগানো তেল ব্যবহার করুন। তুলো দিয়ে একটি বল বানিয়ে তা দিয়ে দিনে কয়েকবার ক্ষত স্থানে প্রয়োগ করুন। এতেই ভালো ফল পাবেন।
বরফ সেঁক: ক্ষত স্থানে বরফ ব্যবহারেও ভালো উপকার পাওয়া যায়। এ জন্য প্রথমে একটি পরিস্কার কাপড়ে বরফ মুড়ে নিয়ে জ্বরঠোসার ওপর কয়েক মিনিটের মতো ধরে রাখুন। এভাবে দিনে তিনবার ব্যবহার করতে থাকুন। তবে সেই সময় অবশ্যই ১০-১২ মিনিটের বেশি হওয়া যাবে না। আবার বরফ সরাসরি ত্বকেও লাগানো যাবে না। এতে ক্ষতের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।