এবারও অভয়াশ্রম এবং উপকূলীয় নদনদীতে মা ইলিশের ওপর গবেষণা চালিয়েছেন মৎস্যবিজ্ঞানীরা। এ সময় তারা ইলিশের পেটে ডিমের পরিমাণ এবং পানির গুণগতমান নিয়েও পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। কয়েক দফায় চালানো হয় এমন গবেষণা। আশার কথা হচ্ছে- মা ইলিশ সংরক্ষণে সরকারি নিষেধাজ্ঞার ফল মিলেছে। এবারো প্রচুর পরিমাণ মা ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। এতে আগামীতে দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। তবে জাটকা সংরক্ষণকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রজনন মৌসুম গত আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমায় মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে। তবে তার আগেও আরেক দফায় সাগরের নোনা পানি ছেড়ে নদীর মিঠা পানিতে ডিম ছাড়ে এই মা ইলিশ।
এ সময় চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনাসহ দেশের ৬টি অভয়াশ্রমে ডিমের নমুনা ও পানির গুণগতমান পরীক্ষা করতে গবেষণা শুরু করেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের একদল মৎস্যবিজ্ঞানী। তারা গত ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর এ ২২ দিন ছাড়াও তার আগে ও পরে নদীতে জাল ফেলে তুলে নেন মা ইলিশ। এ সময় ইলিশের পেটে ডিমের সঙ্গে পরিমাণ ও পানির গুণগতমানও দেখেন তারা। পরে তা নিয়ে চালানো হয় পরীক্ষা নিরীক্ষা।
এরইমধ্যে মৎস্যবিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণার ফলাফল জমা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়ার অপেক্ষা।
এদিকে ইলিশ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা জানান, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ পরেও ইলিশের পেটে ডিম মিলছে। তাই ডিম ছাড়ার পর জাটকা সংরক্ষণে সুরক্ষা দেয়ার তাগিদ দেন চাঁদপুর মৎস্য বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শবেবরাত।
তিনি জানান, এখনো অনেক মাছের পেটে ডিম পাওয়া যাচ্ছে।
দেশের শীর্ষ মৎস্যবিজ্ঞানী ও ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান জানান, বছরজুড়ে ইলিশ মাছ ডিম ছেড়ে থাকে। তবে প্রজনন মৌসুমে তারা পুরো দমে ডিম ছাড়ে। এমন পরিস্থিতিতে এবারও ৫০ ভাগের বেশি মা ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি যথাযথভাবে পালন করা। তবেই আগামীদিনেও ইলিশের উৎপাদন অব্যাহত থাকবে।
মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, আগামী ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই ২ মাস জাটকা সংরক্ষণে নিষেধাজ্ঞা সফল হলে ইলিশের উৎপাদন পৌনে ৬ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে।