ইব্রাহিম খলিল শিমুল।।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কলেজ স্থাপনের জন্য ১০০ শতাংশ জমি দিলেন ছৈয়দ আহম্মদ। সে পেশায় একজন রিকশাচালক ছিলেন।
তিনি উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের ধানসিঁড়ি গ্রামের মৃত আলী আহম্মদ এর ছেলে এবং এখানকার স্থায়বাসিন্দা।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সে প্রায় ৩৮-৩৯ বছর যাবৎ প্যাডেল রিকশা চালাতেন। তার তিন ছেলে ও চার মেয়ে। এক ছেলে প্রবাসে থাকেন। একজন ব্যবসা করেন। অন্যজন বর্তমানে বাড়িতে রয়েছে। তবে সেও প্রবাসে থাকতেন। এবং চার মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন করেছেন। পরিবার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর গত ১৫ বছর আগ থেকে এ রিকশা চালানো বন্ধ করে দেন তিনি। এ কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে পরিবারটি ঘুরে দাঁড়ায়। তখন থেকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে খুব সুন্দর ভাবে পরিবার চালাচ্ছেন ছৈয়দ।
এছাড়া আরও জানা যায়, গত প্রায় ৪০ বছর যাবৎ এ উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরলক্ষী গ্রামে একটি বাড়িতে থাকতেন। তার এ রিকশা চালানোর উপার্জন দিয়ে ক্রয় করেন এ জমি। বিভিন্ন অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে জীবনযাপন করলেও বর্তমানে চর ওয়াপদা ইউনিয়নের ধানসিঁড়ি গ্রামে স্থায়ভাবে তার ক্রয়কৃত জমিতে বসবাস করেন তিনি।
স্থানিয়রা জানান, ছৈয়দ আহম্মদ তিনি আগে বিভিন্ন কঠিন পরিশ্রম করে জীবনযাপন করতেন। তবে বর্তমানে সমাজে তার এখন একটি ভালো অবস্থান রয়েছে। এ সমাজে একাধিক বিত্তবান পরিবার থাকলেও কলেজ স্থাপনের জন্য কেউ এ জমি দিতে স্বীকার হয়নি। সে স্ব-ইচ্ছায় এ জমি দান করে সমাজে একটি বড় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি কলেজ স্থাপনের জন্য যে জমিটি দিয়েছেন তার বর্তমান মূল্য সময়ে প্রায় ৪৫-৫০ লাখ টাকা হবে বলে ধারনা করছি।
সচেতন মহলের শিক্ষিত যুবক মো. আরিজ খান জানান, আমরা এলাকার কিছু সচেতন শিক্ষিত যুবকদের আয়োজনে এ এলাকায় কলেজ স্থাপনের জন্য একটি আলোচনা সভার আয়োজন করি। কিন্তু সভায় কেউ যখন জমি দেয়ার মত কাউকে পাওয়া যায়নি। ঠিক তখনি মাইকের আওয়াজ শুনে ছৈয়দ আহম্মদ মিয়া কলেজের জন্য জমি দিতে ছুটে আসেস। তবে তিনি ওই আলোচনা সভার কোনো অতিথিও ছিলেন না। তার এমন আগ্রহ দেখে সভার অতিথি সহ সকলে মুগ্ধ।
জমি দাতা ছৈয়দ আহম্মদ জানান, আমি পরিশ্রম করে যেভাবে ছোট থেকে বড় হয়েছি। সব কষ্ট গুলো আমার এখনও মনে পড়ে। দৈনিক রিকশা চালিয়ে যে টাকা উপার্জন করতান। তা থেকে অল্প অল্প করে জমিয়ে সেই টাকা দিয়ে আমি এ জমি ক্রয় করি। এখানে কলেজ স্থাপনের পর সুশিক্ষায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিবে গ্রামসহ তথা সারাদেশে। আমি এ জমি কলেজ স্থাপনের জন্য দিতে পেরে খুবই খুশি অনুভব করছি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৯ জুলাই) বিকালে উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নে থানারহাট বাজার এলাকায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য মুজিব চত্বর সংলগ্ন এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় ছৈয়দ আহম্মদ এ জমি দানের জন্য ঘোষাণা দেন।