সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ কোটাপদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (১৪ জুলাই) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।
এর আগে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।
গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন। পরে ১০ জুলাই হাইকোর্টের দেয়া রায়ে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা দেন আপিল বিভাগ।
এদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল। এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি বঙ্গভবনে যায়। দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রতিনিধিদলটি বঙ্গভবনে প্রবেশ করে।
প্রতিনিধি দলে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হলেন- আরিফ সোহেল, সারজিস আলম, নাহিদ ইসলাম, আব্দুল হান্নান মাসউদ, আসিফ মাহমুদ, রাশিদুল ইসলাম রিফাত, আব্দুল কাদের, মো. মাহিন ও হাসিব আল ইসলাম।
এ ছাড়াও ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজের দুই নারী প্রতিনিধি সুমাইয়া জাহান ও মেহেরুন নেসা রয়েছেন।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে গ্রন্থাগারের সামনে বেলা ১১টার আগে থেকেই ছোট ছোট দলে জড়ো হতে শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১২টায় তারা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে এ পদযাত্রা শুরু করেন। এতে ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হন।
এসময় মিছিলটি বঙ্গভবনের উদ্দেশে এগিয়ে যেতে থাকলে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষা ভবনের সামনে তাদের আটকানোর জন্য ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। পরে শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান।
এরপর গণপদযাত্রা নিয়ে শিক্ষা ভবন এলাকা অতিক্রম করে সচিবালয়ের কাছে পৌঁছালে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সচিবালয় গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তাদের এ কর্মসূচি রাজধানীর জিরো পয়েন্টে পৌঁছালে পুলিশের ব্যারিকেড লক্ষ্য করা যায়। ব্যারিকেডের কারণে সামনে এগোতে না পেরে সড়কেই বসে পড়েন তারা। এসময় সেখানে বসেই তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গবভনের দিকে রওনা হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এসময় গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় পুলিশের একটি সাঁজোয়া যান দেখা যায়। এসময় রাস্তা ব্লক করে ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো শিক্ষার্থী স্লোগান দিতে থাকেন। তবে মতিঝিলের রাস্তা আটকে রাখেন পুলিশ সদস্যরা। গুলিস্তান মোড়ে এপিসি কার ও জলকামান নিয়ে শত শত পুলিশ সদস্যকে প্রস্তুত থাকতেও দেখা যায়।
বেলা ১১টায় শুরু হওয়া এই গণপদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।