গ্রিন টি পানে কি আসলেই ওজন কমে, যা বলছেন পুষ্টিবিদ

0
296

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় পানীয়ের মধ্যে অন্যতম একটি চা। অভ্যাসগত কারণে বা ভালো লাগা থেকে প্রায় সবাই কম-বেশি চা পান করেন। কেউ র চা, কেউবা আবার দুধ চা পান করেন। তবে এর পাশাপাশি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্রিন টি’র জনপ্রিয়তাও রয়েছে ব্যাপক। আধুনিক এ সময় অনেকেই অনাকাঙ্ক্ষিত বেড়ে যাওয়া ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টি পান করে থাকেন।

সম্প্রতি দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন রাজধানীর মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারের পুষ্টিবিদ শরীফা আক্তার শাম্মী। তার ভাষ্যমতে―চায়ের মধ্যে বেশি উপকারিতা গ্রিন টির। এটি শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে। তবে এ জন্য অবশ্যই চিনি ছাড়া পান করতে হবে। এক কাপ দুধ চা বা কফির থেকেও বেশি স্বাস্থ্যকর গ্রিন টি।

এ পুষ্টিবিদ বলেন, ওজন কমানোর জন্য সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রয়েছে গ্রিন টির। শুধু গ্রিন টি পানে আবার ওজন কমানো সম্ভব নয়। যারা স্বাস্থ্য কমাতে নির্দিষ্ট ডায়েট মেনে চলেন এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করছেন, তারা খাদ্যতালিকায় গ্রিন টি রাখতে পারেন। এতে ভালো ফলাফল পেতে পারেন।

সকালে খালি পেটে গ্রিন টি পান করা উচিত নয়। এটি পানের জন্য উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকালে খাবার খাওয়ার ৪৫ থেকে ৬০ মিনিট পর এবং ব্যায়ামের ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট আগে বা পরে।

পুষ্টিবিদ শরীফা আক্তার শাম্মী বলেন, গ্রিন টিয়ে বিদ্যমান পলিফেনল চর্বি জারণ বা ফ্যাট অক্সিডেশন হওয়ার প্রক্রিয়াকে ভালো করে। এটি নিয়মিত পানে শরীরের মেদ কোষে শর্করা ঢুকতে পারে না। এতে থাকা বিভিন্ন উপাদান শরীরের বিপাকীয় হার বৃদ্ধি করে। যা বাড়লে ওজন দ্রুত কমে যায়। এছাড়া গ্রিন টিয়ে থাকা ক্যাফেইন ব্যায়ামের শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। আর নিয়মিত পানে এবং ব্যায়ামে শরীরের চর্বি দ্রুত কাটতে থাকে। কিন্তু ব্যায়াম না করে শুধু গ্রিন টি পানে এ উপকার পাওয়া যাবে না।

ওজন কমানো ছাড়াও আরও যেসব ক্ষেত্রে গ্রিন টি পানে উপকার যাওয়া যায় সেগুলো হলো―অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড শরীরকে বেশ সতেজ ও চাঙা রাখতে সহায়তা করে। হজমপ্রক্রিয়া ভালো করে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গ্রিন টিয়ে থাকা ক্যাটাচিন নামক উপাদান শরীরের নানা উপকারে আসে এবং পেটের মেদ কমাতেও সহায়তা করে।

এছাড়া গ্রিন টিয়ে বিদ্যমান থিয়ানিন নামক অ্যামাইনো এসিড ডিপ্রেশন বা অবসাদ কমিয়ে থাকে। মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটায়। শরীরের ধমনী পরিষ্কার রাখে এবং হার্টের ব্লকেজের ঝুঁকি হ্রাস করে। এমনকী গ্রিন টি পানে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণসহ দাঁত ক্ষয়ের ঝুঁকি হ্রাস করে থাকে গ্রিন টি।

সতর্কতা, গ্রিন টি পানে নানা উপকারিতা থাকলেও অতিরিক্ত পান করা ভালো নয়। এ জন্য দিনে ২-৩ কাপের বেশি গ্রিন টি পান করা উচিত নয়। অতিরিক্ত পানের ফলে অনিদ্রার সমস্যা হতে পারে। আবার রাতে ঘুমেরও সমস্যা হতে পারে।

Facebook Comments Box

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here