ছাপানো শুরুই হয়নি ১০ কোটির বেশি বই, উৎসব হবে কীভাবে!

0
263

বই উৎসবের বাকি মাত্র দেড় মাস। প্রাথমিক স্তরের ৭৫ শতাংশ বই ছাপা হলেও নবম শ্রেণিসহ মাধ্যমিকের দশ কোটি বই ছাপার কাজ এখনও শুরুই হয়নি। তাই বছরের প্রথম দিন কোনোভাবেই সব বই পাওয়া সম্ভব নয় বলছেন মুদ্রণ সংশ্লিষ্টরা। তবে পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বলছে, কিছু বই ছাপানো বাকি থাকলেও নির্দিষ্ট সময়েই হবে বই উৎসব।

এর মধ্যে অষ্টম ও নবম শ্রেণির জন্য ছাপানো হবে ১০ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বই। আর প্রাথমিক স্তরের মোট বই প্রায় ৯ কোটি ৫০ লাখ। এ ছাড়া ইবতেদায়ির জন্য ২ কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার ১৩৫টি বই ছাপা হবে।

তবে চলতি বছর নভেম্বরের মাঝামাঝিতে এসে প্রাথমিকের বই ছাপানোর অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ হলেও হ-য-ব-র-ল মাধ্যমিকের ছাপাকাজে। ১০ কোটির বেশি বই এখনো মুদ্রণ প্রক্রিয়ার বেশ দূরে ।

ভুল পাণ্ডুলিপির কারণে বন্ধ আছে ৬ষ্ঠ শ্রেণির একটি বই ছাপার কাজ। আর নবম শ্রেণির সবগুলো বই ছাপার প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে তার সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণও নির্ধারিত হয়নি।

মুদ্রণ সমিতির সূত্র বলছে, প্রথম ও ৫ম শ্রেণির ৮০ শতাংশ বই ছাপা শেষ হয়েছে। ২য় ও ৩য় শ্রেণির বইয়ে সংশোধনী থাকায় দেরিতে ছাপা শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ৯ম শ্রেণির বইয়ের এখনও ওয়ার্ক অর্ডার হয়নি। কবে শুরু হবে ছাপা, নিশ্চিত নয় কেউ।

মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ খান বলেন, ছাপার সার্বিক অগ্রগতি বিবেচনায় কোনোভাবেই বছরের প্রথম দিনে সব বই স্কুল পর্যায়ে পৌঁছা তো দূরের কথা, ছাপাই সম্ভব না।

আর কাগজের মান খারাপ হওয়ার বিষয়ে কম দরে কাজ দেয়াকে দায়ী করে তিনি বলেন,
এবার যে দরে কাজ দেয়া হয়েছে, তাতে কাগজের মান খারাপ হবে স্বাভাবিক। যদি এনসিটিবি নিম্নদরের দরপত্র বাতিল করে ন্যায্যমূল্যে কাজ দিত, তাহলে হয়তো এমন অবস্থা তৈরি হতো না।

এনসিটিবির সূত্র জানায়, গত শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকের বই ছাপানো নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় এবার বই ছাপানোর কাজ আগে শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইটি দফায় দফায় সংশোধন হওয়ায় মাধ্যমিকের বই ছাপাতে কিছুটা দেরি হয়েছে। এরমধ্যে রাজনৈতিক সহিংস কর্মসূচির মধ্যে বই ছাপানো এবং তা স্কুলে স্কুলে পৌঁছানো বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলেই মনে করছেন সবাই।

যদিও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন,
ছাপা কাজে সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে। কিছু বই ছাপানো বাকি থাকলেও নির্দিষ্ট সময়েই তা শেষ হবে। কাজেই বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া নিয়ে যে শঙ্কার কথা বলা হচ্ছে, সেটি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই।

আর পাঠ্যপুস্তক বহনকারী যানবাহনকে রাজনৈতিক কর্মসূচির সহিংসতা থেকে রক্ষা করতে বন্ধের দিনে বই প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা করেছে এনসিটিবি।

Facebook Comments Box

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here