বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন: মূল হোতা নবী, দাবি ডিবি প্রধানের

0
277

শুক্রবার রাতে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার নৃশংসতার পেছনে দায়ীদের খুঁজে বের করতে রাত থেকেই তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দারা।

শনিবার (৬ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ১২টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানায়, এ ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডিবি প্রধানের দাবি, দু’দিন আগে অনলাইন বৈঠকে এ পরিকল্পনা হয়। এতে ছিলেন দক্ষিণ যুবদলের ৮টি টিম লিডার। পরামর্শ ও অর্থদাতাদের অন্যতম ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী। কাজী মনসুরের নামে একজনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মিলেছে এ সব তথ্য।

তিনি বলেন, ট্রেনে আগুন লাগার আগে বিএনপির ১০/১১ জন ভিডিও কনফারেন্স করেন। সেখানে তারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছুর পরিকল্পনা করেন। বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির হাইপ্রোফাইল নেতারা ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক ও কাজী মনসুর।

ডিবি হারুন বলেন, ‘তারা ভিডিও কনফারেন্সে এসে বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে বিশেষ করে নরসিংদীর কাছে সুবিধাজনক স্থানে অগ্নিসংযোগ করার কথা বলেন। আরেকটি স্থানও তারা নির্ধারণ করেন। কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ লাইনের আপ-ডাউনে সুবিধাজনক স্থানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরিকল্পনা করেন।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের নেতা রবিউল ইসলাম নয়নের তত্ত্বাবধানে কয়েকটি টিম লালবাগের কয়েকজন দাগি সন্ত্রাসী দিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন লাগান। ভিডিও কনফারেন্সে বলা হয়, ট্রেনে কে আগুন লাগাবেন? কনফারেন্সে থাকা ১০-১২ জনের একজন বলেন, তিনি আগুন লাগাতে পারবেন। তবে, তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে তার নামটি আমরা বলব না।

‘এ ছাড়া, ভিডিও কনফারেন্সে থাকা আরও তিনজন আগুন লাগাতে পারবেন বলে জানায়। তারা ২০১৩-১৪ সালে বিভিন্ন এলাকায় বোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। তারা মিলে যাত্রাবাড়ীর আশপাশের এলাকা থেকে ট্রেনটিতে অগ্নিসংযোগ করে।’

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, যে মোবাইল থেকে ভিডিও কনফারেন্স করা হয়েছিল সেই মোবাইল উদ্ধার করেছে ডিবি। মোবাইলটি কাজী মনসুরের। তিনি আমাদের কাছে গ্রেপ্তার আছেন। যারা এক সময় জেলখানায় দাগি আসামি হিসেবে পরিচিত ছিল, তারা এ অগ্নিসংযোগ করে।

যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের রিমান্ডে এনে ট্রেনে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক নবী উল্লাহ নবীকে আটক করে নিয়ে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে বিএনপি নেতা মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Facebook Comments Box

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here