যশোরের চৌগাছা উপজেলার টেঙ্গুরপুর গ্রামের আইয়ুব খান ও ইউনুস খান জোড়া হত্যা মামলায় দুজনের ফাঁসি ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন: টেঙ্গুরপুর গ্রামের আবজেল খানের ছেলে বিপ্লব ওরফে বিপুল ও মুকুল খান। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলো তাদের অপর ভাই বিল্লাল খান ও তার স্ত্রী রুপালী বেগম।
মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক চার আসামির মধ্যে মুকুল খান ও বিপ্লব ওরফে বিপুলকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে অপর দুই আসামি বিল্লাল খান ও তার স্ত্রী রুপালী বেগমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ রায়ে বাদী পক্ষ সন্তুষ্ট।
অপরদিকে রায় শুনে আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন দণ্ডিতদের স্বজনরা। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মুকুল খানের স্ত্রী জলি বেগম বলেন, মিথ্যা সাক্ষীর মাধ্যমে নির্দোষ ব্যক্তিদের সাজা দেয়া হয়েছে। আমরা এ রায় মানি না। আমরা ন্যায় বিচার পেতে উচ্চ আদালতে যাব।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে চৌগাছা-মহেশপুর সড়কের টেঙ্গুরপুর সর্দার ব্রিকসের বিপরীতে মুকুল হোসেনের চার দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন ইউনুস খান। কাজের লোক ঠিক করা নিয়ে প্রথমে ইউনুস খানের সঙ্গে দোকানি মুকুলের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় ইউনুসকে মারধর করে মুকুল, বিল্লাল, বিপুল ও রুপালি বেগম। পরবর্তীতে ইউনুসের ভাই আইয়ুব খা ও ভাতিজা আসাদুজ্জামান খানসহ মুকুলের দোকানে যায় এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে। এ সময় মুকুল তার ভাই বিপুল, বিল্লাল ও রুপালি বেগম মিলে ইউনুস খান, আইয়ুব খান এবং আসাদুজ্জামান খানকে দা ও বটি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। এতে তিনজনই গুরুতর জখম হন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ইউনুছ আলী খান ও আইয়ুব আলী খানকে মৃত ঘোষণা করেন। আসাদুজ্জামান খানের মাথায় ও হাতে গুরুতর জখম হয়।
এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের হলে দীর্ঘ শুনানির পর আদালত দুজনের ফাঁসি এবং দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।