যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ১৮৪

0
141

সাত দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি স্থল ও বিমান বাহিনী অভিযান শুরুর প্রথম দিনে মোট ১৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শনিবার (২ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

গাজায় গত ২৪ নভেম্বর শুরু হওয়া চার দিনের যুদ্ধবিরতি দুই দফা বাড়িয়ে সাত দিন করা হয়। মেয়াদ বাড়াতে আন্তর্জাতিক চাপ ও হামাসের পক্ষ থেকে নতুন করে প্রস্তাব দেয়া হলেও রাজি হয়নি ইসরাইল।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে সাত দিনের যুদ্ধ বিরতি শেষ হওয়ার পর থেকেই অবিরাম বিমান ও রকেট হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার বাহিনী। মুহুর্মুহু বোমা হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ ফিলিস্তিনি। ধ্বংস হচ্ছে ঘরবাড়িসহ আবাসিক স্থাপনা।

এরমধ্যেই গাজার দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল। এ অবস্থায় যে যেভাবে পারছেন প্রাণ বাঁচাতে পালাচ্ছেন। তবে, পালানোর সময়ও ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে।
আল জাজিরার খবরে গাজার স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকর্তাদের বরাতে জানানো হয়েছে, হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ১৮৪ জন নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ইসরাইলি হামলায় আহত হয়েছেন ৫৮৯ জন। কমপক্ষে ২০টি ঘরবাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে।

এদিকে লেবানন-ইসরাইল সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ইসরাইলি সেনাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে লেবাননভিত্তিক শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে লেবাননের তিন নাগরিক নিহত হয়েছেন।

গাজায় ইসরাইলের হামলা শুরু হলে এই হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটি বলেছে, লেবানন-ইসরাইল সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ইসরাইলি সেনাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

সশস্ত্র গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর একটি সামরিক অবকাঠামোর কাছে ‘উপযুক্ত অস্ত্র’ ব্যবহার করে সেনাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর ইসরাইলের সেনাদের লক্ষ্য করে এটিই হিজবুল্লাহর প্রথম হামলা।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, রোস হানকারা, মার্গালিওট ও কিরাত সমোনায় সেনা ছাউনি লক্ষ্য করে হিজবুল্লাহ হামলা চালিয়েছে। তবে সব হামলাই প্রতিহত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।

ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আরও জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর হামলার পর লেবাননে তাদের লঞ্চার লক্ষ্য করে একাধিক হামলা চালানো হয়েছে।

প্রায় দেড় মাস সংঘাতের পর গত সপ্তাহে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরাইল ও হামাস। ২৪ নভেম্বর সকাল থেকে কার্যকর হয় চার দিনের যুদ্ধবিরতি। এরপর আরও দুই দফায় তিন দিনের যুদ্ধবিরতি বাড়ানো হয়। চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতিকালে নিয়মিত বন্দি বিনিময় হয়েছে।

সবশেষ যুদ্ধবিরতির সপ্তম দিন বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে ৮ ইসরাইলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পান আরও ৩০ ফিলিস্তিনি। ১০৫ ইসরাইলি জিম্মির বিনিময়ে মোট ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

আশা করা হচ্ছিল, নতুন করে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়বে বা স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা জোরদার হবে। কিন্তু তার আগেই নতুন করে সংঘাত শুরু হলো। তবে কাতারি, মিশরীয় ও মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, আবারও যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here