আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষকে ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। আর ফরজ ইবাদতের ঢাল বলা হয় নফল ইবাদতকে। নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ নৈকট্যও অর্জন করা সম্ভব হয়। ইশরাক, চাশত বা দোহার নামাজ এগুলো সবই নফল নামাজের ভিন্ন ভিন্ন নাম।
নবীজি সা. উম্মতকে ইশরাক ও চাশতের নামাজ আদায় করতে উৎসাহ দিয়েছেন। চাশতের নামাজকে সালাতুদ দোহাও বলা হয়। ইশরাকের পরপরই চাশত বা দুহার সময় শুরু হয়। এসব নামাজের ওয়াক্ত হলো সূর্য উদিত হওয়ার ১৫ মিনিট পর থেকে দ্বিপ্রহরের ৫ মিনিট আগ পর্যন্ত।
চাশতের নামাজের সময়
সূর্য যখন আকাশে এক চতুর্থাংশ ওপরে উঠে। সূর্যের তাপ প্রখর হয়, তখন থেকে দ্বিপ্রহরের আগ পর্যন্ত (৯টা থেকে ১১টার মধ্যে) চাশতের সময়। তখন দুই, চার বা আট রাকাত নামাজ পড়া। একে চাশতের নামাজ বলে। হাদিসে আছে চাশতের দুই রাকাত নামাজে শরীরের সর্বমোট ৩৬০টি জোড়ার সদকা আদায় হয়ে যায়। সমুদ্রের ফেনার সমান গুনাহ (সগিরা) হলেও মাফ হয়ে যায়। অপর হাদিসে আছে তার জন্য জান্নাতে একটি বালাখানা তৈরি করা হয়। এছাড়াও হাদিসে চাশতের নামাজের আরো অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। (সহিহ মুসলিম ৭৪৮)
মক্কা বিজয়ের দিন দুপুরের আগে রাসুল সা. আলী রা. এর বোন উম্মে হানি রা.-এর ঘরে খুবই সংক্ষিপ্তভাবে ৮ রাকাত পড়েছিলেন বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। সংক্ষিপ্তভাবে পড়লেও রুকু এবং সেজদায় তিনি পূর্ণ ধীরস্থিরতা বজায় রেখেছিলেন এবং প্রতি দুই রাকাত অন্তর সালাম ফিরিয়েছিলেন। (বুখারি ২০৭)
হাদিসে এসব নফল নামাজ দুই রাকাত করে পড়ার কথা রয়েছে। হজরত ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, صلاة الليل والنهار مثنى مثنى ‘দিন ও রাতের নফল নামাজ দুই দুই রাকাত করে। (তিরমিজি ৫৯৭, আবু দাউদ ১২৯৫)
চাশতের নামাজের ফজিলত
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আমার নবী আমাকে তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন, যেন আমি তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ত্যাগ না করি। প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, দুহার নামাজ বা চাশতের নামাজ পড়া ও ঘুমানোর আগে বিতর আদায় করা। (সহিহ বুখারি ১১৭৮)
অন্য হাদিসে তিনি বলেন, মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড়া আছে। অতএব, মানুষের কর্তব্য হলো প্রত্যেক জোড়ার জন্য একটি করে সদকা করা। সাহাবায়ে কেরাম বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কার শক্তি আছে এই কাজ করার?’
তিনি বলেন, ‘মসজিদে কোথাও থুতু দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও। তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত নামাজ এর জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ ৫২২২)