প্রচণ্ড গরমে বেহাল দসা সকলের। তাপদাহ যেন বেড়েই চলেছে। এসময় ছোট বড় সবারই রোগ ব্যাধির প্রবণতা বেড়ে গেছে। রোদের তাপে হিট স্ট্রোকের কবলে পড়ছেন একের পর এক। শরীরে অধিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকেই বলা হয় হিট স্ট্রোক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিট স্ট্রোক এক ধরনের হাইপারথার্মিয়া। হাইপার হচ্ছে অধিক মাত্রা, আর থার্মিয়া মানে তাপ। আমাদের শরীরের ভেতরে নানা রাসায়নিক ক্রিয়ার কারণে সব সময় তাপ সৃষ্টি হতে থাকে।
ঘামের সাহায্যে সেই তাপ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু একটানা রোদে থাকলে গরমে ঘামের সঙ্গে শরীরের অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যায়।
শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যাওয়ায় ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি হয়। ঘামের সঙ্গে লবণ বেরিয়ে যাওয়াতে লবণের ঘাটতি দেখা দেয়। যার ফলে শরীরকে করে তোলে অবসন্ন ও পরিশ্রান্ত।
এতে মাথাঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারেন অনেকেই। তৎক্ষণাৎ চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে মৃত্যুও হওয়া অস্বাভাবিক নয়। বাচ্চা, বয়স্ক ও যারা ওবেসিটিতে ভুগছে তাদের হিট স্ট্রোকের প্রবণতাও বেশি।
যতটুকু সম্ভব এই গরমে রোদে কম বের হতে হবে। একান্তই বের হতে হলে সঙ্গে পানির বোতল রাখা দরকার ও মাঝে মাঝে পানি পান করা উচিত। তা না হলে শরীর অবসন্ন মনে হওয়া মাত্রই ছায়াযুক্ত বা শীতল কোনো স্থানে বিশ্রাম করতে হবে।
যদি অবস্থা খারাপ মনে হয় তাহলে ঠান্ডা পানিতে ভেজানো কাপড় শরীর মুছে দিতে হবে। খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে, যাতে শরীরের লবণ ও জলের শূন্যতা দূর করতে পারে। অজ্ঞান হয়ে গেলে বা মাথা ঘোরালে মাথায় পানি ঢালতে হবে। তাতেও যদি অবস্থার উন্নতি না হয়, তাহলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
সুরক্ষিত থাকতে-
১. দুপুর ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। ঘরের ভিতরেই থেকে কাজ করুন। এই সময়ে রোদের তাপ সবচেয়ে বেশি থাকে।
২. সারা দিন ধরে ঘন ঘন পানি খান। শরীর শুকিয়ে যেতে দেবেন না।
৩. নরম সুতির পোশাক পরুন যাতে ঘাম হলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
৪. বাইরে বের হলে রোদচশমা, ছাতা অবশ্যই সঙ্গে নেবেন। সূর্যের আলো সরাসরি গায়ে লাগতে দেবেন না।
৫. খেয়াল রাখবেন যাতে সারা দিনের খাবারে যেন বেশি প্রোটিন থাকে। শাক-সবজি, ফলমুল বেশি খাবেন। বাসি খাবার খাবেন না।