যুক্তরাষ্ট্র ১৪ চীনা এবং কানাডিয়ান কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এসব কোম্পানিকে ভয়াবহ মাদক ফেন্টানাইল আমদানির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন বিভাগ এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এ নিষেধাজ্ঞা চীনকেন্দ্রিক সিন্ডিকেটকে উদ্দেশ্য করে জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা আজ যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষ থেকে একটি ঘোষণা দিতে এসেছি। আমরা জানি কারা যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের কাছে ফেন্টানাইল পৌঁছে দিচ্ছে।
অভিযুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে চীনা ফার্মাসিটিক্যাল একটি কোম্পানি রয়েছে। এ কোম্পানির বিরুদ্ধে জিলাজাইন নামের একটি হর্স ট্রাঙ্কুলাইজার (ঘোড়ার চেতনানাশক ওষুধ চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। এই ওষুধ থেকে ফেন্টানাইল বানিয়ে তা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে ব্যবহার করা হয়।
ভিন্ন আরেক নিষেধাজ্ঞায় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ ২৮ ব্যক্তির ওপর অবৈধ মাদক পরিচালনের দায়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়। দেশজুড়ে ফেন্টানাইল, মেথাফেটামিন ও এমডিএমএ জাতীয় মাদক ছড়িয়ে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে এসব ব্যক্তির কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন বিভাগ জানায়, এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে হেবেই সেংঘাও ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (হেবেই প্রদেশ), লিহে ফার্মাসিটিক্যাল টেকনোলজি কোম্পানি (উহান), হেনান রুইজিউ বায়োটেকনলজি কোম্পানি (জেনঘজু), জিয়ামেন ওয়ান্ডারফুল বায়োটেকনলজি কোম্পানি (জিয়ামেন), আনহুই রুইহান টেকনোলজি কোম্পানি (হেফেই), হানহং মেডিসিন টেকনোলজি কোম্পানি প্রভৃতি।
কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগই উপরে উল্লিখিত জিলাজিন নামের ওষুধটি যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী। এগুলো ঘোড়া, গবাদি পশুসহ অন্যান্য পশুপাখির চেতনানাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মানুষের জন্য এটি প্রযোজ্য নয়। যেসব মাদকসেবী এ ওষুধটার মিক্সার ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে গ্রহণ করে তাদের শরীরে ক্ষত সৃষ্টি বা অঙ্গহানির আশঙ্কা প্রবল।
অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড বলেছেন, ফেন্টানাইলের সরবরাহ চেইন সাধারণত শুরু হয় চীনের রাসায়নিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে। তবে এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে চীনের দূতাবাস কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, চীন ও মেক্সিকোর মধ্যে কোনো ফেন্টানাইল পাচার হচ্ছে না।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যবহারকারীদের কাছে ফেন্টানাইল সরবরাহের জন্য মেক্সিকোর ড্রাগ গ্যাংকে দায়ী করেছে ওয়াশিংটন। চিকিৎসকরা এই ওষুধ রোগীদের খাওয়ার অনুমতি দিতে পারেন। কিন্তু কয়েক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে এটা দিয়ে তৈরি ব্যথানাশক ওপিয়ডের ব্যবহার ও চাহিদা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে।
২০২২ সালে কোনো না কোনো সময় এই ওষুধ ব্যবহার করেছেন এমন এক লাখ ৯ হাজার ৬৮০ জনের মৃত্যু হয়।
ফলে ফেন্টানাইল উৎপাদন এবং সরবরাহ ও পাচারের সঙ্গে যুক্ত চীনভিত্তিক নেটওয়ার্ক এবং অন্য অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে।