একের পর এক অগ্নিকাণ্ড; ঘটছে প্রাণহানি, পুড়ছে সম্পদ। কিন্তু কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে কি? ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। অপরদিকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বলছে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন মালিকদের সতর্ক করতে অভিযান চালানো হয়, হয় জরিমানাও। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুতই টাস্ক ফোর্স গঠন করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন ইমারত ও দুর্ঘটনা বিশেষজ্ঞরা।
গত বছরের ১৫ এপ্রিল ভোর রাতে হঠাৎ আগুনে পুড়ে রাজধানীর নিউমার্কেট। পুড়ে যায় কয়েক শ দোকান, আর সেই সঙ্গে হাজারও মানুষের স্বপ্ন। সেই ঘটনার পর আবারও দোকান সাজিয়েছেন তারা। তবে পিছু ছাড়েনি আতঙ্ক। এখনও ভয়ে থাকেন আবার না ঘটে কোনো দুর্ঘটনা।
শুধু নিউমার্কেটই নয়, ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, রাজধানীসহ সারা দেশে অগ্নিঝুঁকিতে আছে ৮০ শতাংশ ভবন। বিদায়ী বছরে দেশে ২৭ হাজার ৬২৪টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ১৪ টাকা সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডে সারাদেশে ২৮১ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হন।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, নকশা অনুমোদন নিলেও পরে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই হয় ভবন নির্মাণ। অপরদিকে রাজউক বলছে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকায় আছে শপিং কমপ্লেক্স, হাসপাতালও।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, বাণিজ্যিক ক্ষেত্র দেখা যায় যে প্রায়ই সংশ্লিষ্টরা সব কিছু মেইনটেইন করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আবাসিক ক্ষেত্রে ভবন মালিকরা নিয়মগুলো মানতে চান না।
রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলমা বলেন, ‘প্রথমত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হলে রাজউক সেটা জনগণকে সতর্ক করতে পারে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, ভবনটি সরকারি মালিকানাধীন হলে সরকারি সংস্থাকে আমরা অবহিত করতে পারি।
এমন পরিস্থিতিতে ইমারত ও দুর্ঘটনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাস্কফোর্স গঠন করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা।
দুর্ঘটনা বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান বলেন, কাগজে-কলমে ফায়ার সেফটির জন্য দরকারী সিঁড়ি এবং উপকরণগুলো আমরা দেখাচ্ছি। কিন্তু যখন ভবনটি তৈরি হচ্ছে, তখন সেটি নকশা অনুযায়ী হচ্ছে কিনা, সেটা তদারকি করতে হবে। এজন্য আমরা একটা টাস্ক ফোর্স গঠন করতে পারি, যারা শুধু নকশার প্রয়োগটা দেখবে।
বিল্ডিং কোড আইন অনুযায়ী, যথাযথভাবে আইনের বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষকে আরও তৎপর হওয়ার কথাও বলেন বিশেষজ্ঞরা।