মাদ্রাসায় পড়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেন মেহেনাজ

0
105

মাদ্রাসায় পড়ে পছন্দের মেডিকেল ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন মাহবুবা মেহেনাজ। মেহেনাজ নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নে অবস্থিত কড়িহাটি ছালেমিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ২০২১ সালে দাখিল পাশ করে স্থানীয় চাটখিল মহিলা ডিগ্রি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। ২০২৩ সালে এই কলেজ থেকেই তিনি জিপিএ ফাইভসহ উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত হয় ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল। এই ফলাফলে মেহেনাজ ২৭৬.২৫ স্কোর নিয়ে জাতীয় মেধায় ১০৩৪তম স্থান লাভ করেন। তিনি তার পছন্দের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হন।

মেহেনাজ চাটখিল উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নের সিংবাহুড়া গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির কামরুল হাসানের বড় মেয়ে। তার বাবা কড়িহাটি ছালেমিয়া ফাজিল মাদ্রাসার গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক এবং মা মারজাহান বেগম গৃহিণী।

মেহেনাজ বলেন, ‘মেডিকেলে পড়ার ইচ্ছেটা দশম শ্রেণি থেকেই। কলেজে ওঠার পর ইচ্ছাটা আরও প্রবল হয়েছে। কলেজে পড়ার সময় থেকেই একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি এডমিশনের কিছু প্রিপারেশন নেয়া শুরু করেছিলাম। তখন থেকেই আমি সাদা এপ্রোনের সঙ্গে স্টেথোস্কোপ পরে আছি- এমনটা কল্পনা করতাম। এভাবে নিজেকে নিজেই অনুপ্রেরণা দিতাম।’

তিনি আরও জানান, সারাদিন কলেজ করে এসে আবার টিউশনি করানোর পর খাওয়ার সময় থাকতো না। মা তখন নিজ হাতে ভাতের প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে খাইয়ে দিতেন। আমার জীবনের কঠিন সময়গুলোতে আমার মা আমার হাতটা শক্ত করে ধরে আমায় এগিয়ে দিয়েছেন। আমি যখনই হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতাম, আমার মা আমায় আবার উঠে দাঁড় করিয়েছেন। তবে মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফলের পর মায়ের মুখের হাসিটা দেখে অতীতের সব কষ্টগুলা ভুলে গিয়েছি। বাবাও শেষদিকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছিলেন।

মাদরাসা থেকে কলেজে আসার পর স্যারেরা অনেক বেশি সাহস দিয়েছেন। তাদের কথা শুনলে নিজের ভিতর একটা আলাদা কনফিডেন্স পেতাম। এমবিবিএস পাশ করে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার পাশাপাশি বিসিএস দিয়ে চিকিৎসা পেশায় নিজেকে ভালোভাবে উৎসর্গ করার ইচ্ছে আছে বলেও জানিয়েছেন মেহেনাজ।

চাটখিল মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, গতবারের মতো এবারেও আমাদের একজন শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছেন। সাফল্যের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য মেহেনাজকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের কলেজ থেকে পাশ করা অনেকেই এখন ডাক্তারি পেশায় সুনামের সঙ্গে নিযুক্ত আছেন। প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে বিষয়টা আমার জন্য গর্বের।

এ বছর সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০৪টি মেডিকেল কলেজের ১১ হাজার ৬৭৫টি আসনের জন্য এবার এক লাখ ৪ হাজার ৩৭৪ জন ভর্তিচ্ছু আবেদন করেন। ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট আসন ৫ হাজার ৩৮০টি এবং বেসরকারি পর্যায়ে অনুমোদিত ৬৭টি মেডিকেল কলেজে মোট আসন ৬ হাজার ২৯৫টি।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here