চিরতা সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি। এটি একটি ঔষধি ভেষজ। চিরতা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আয়ুর্বেদশাস্ত্রে বিভিন্ন রোগের নিরাময়ে চিরতার পানিকে ব্যবহার করার কথা উল্লেখ রয়েছে।
স্বাদে তেতো হলেও স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর এই ভেষজ উদ্ভিদ। চিরতা আর কালমেঘ কিন্তু এক নয়, অনেকেই এটা গুলিয়ে ফেলেন। শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরানো, জ্বর কমানো থেকে শুরু করে তারুণ্য বজায় রাখাসহ নানা সমস্যায় কাজ করে চিরতার পানি।
চিরতা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। কারণ চিরতা রক্তে চিনির পরিমাণ কমায়। ব্লাডের সুগার লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া চিরতার পানি রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয় অনেকটাই।
অনেকেরই মারাত্মক অ্যালার্জির সমস্যা থাকে। অ্যালার্জির জন্য শরীর ফুলে যায়, চোখ ফুলে যায়। শরীরে র্যাশও দেখা যায় অনেক সময়। চিরতা এক্ষেত্রে উপকারী। রোজ সকালে খালি পেটে চিরতার পানি পান করুন উপকার পাবেন।
আজকাল অনেকেই লিভারের সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে চিরতার পানি উপকারী। চিরতার পানি লিভারকে পরিষ্কার রাখে। এ ছাড়া এই পানীয় লিভারের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ফ্যাটি লিভার ও আরও অন্যান্য সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে।
চিরতা পরিষ্কারক হিসাবেও কাজ করে। চিরতার পানি শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে দেয়। এতে শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার হওয়ায় অনেকটাই ফ্রেশ অনুভূতি দেবে আপনাকে।
যদি হজমের সমস্যা থাকে তাহলেও খেতে পারেন চিরতার পানি। এটি বদহজম, অ্যাসিডিটি থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া যদি আপনার কোষ্ঠ্যকাঠিন্যর সমস্যা থাকে তাহলে নিয়মিত চিরতার পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।
অ্যানিমিয়ার সমস্যা কমাতেও চিরতার পানি খুব উপকারী। রক্ত কমে গেলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। আর এ সমস্যায় চিরতার পানি দারুণ কাজ করে। কারণ চিরতার পানির রক্ত উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ত্বকের জন্যও চিরতা খুব উপকারী। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন চামড়ার ঘা, অন্যান্য ক্ষত সারাতে চিরতার পানি বেশ উপকারী। এই পানীয় ত্বকের অন্যান্য যেকোনো ইনফেকশন দ্রুত সারিয়ে তুলতে পারে।
এ ছাড়া নিজের তারুণ্য ধরে রাখার জন্যও রোজ সকালে চিরতার পানি খালি পেটে পান করতে পারেন। কারণ চিরতা রক্তকে পরিষ্কার করে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে। আর রক্ত সঞ্চালন বা ব্লাড সারকুলেশন তারুণ্য ধরে রাখার একটি অন্যতম প্রধান শর্ত, যা আপনি সহজেই চিরতার পানি পান করার মাধ্যমে পেতে পারেন।