শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষা, যেকোনো ঋতুতেই ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা হতে পারে। অনেকেরই শীত শুরু হতে না হতেই ত্বক ও চুলের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। কারও আবার স্বাস্থ্যের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম পানিশূন্যতা। তবে শীতকালে যে পানিশূন্যতা হতে পারে, এ বিষয়ে খুব কম সংখ্যক মানুষই অবগত।
সাধারণত সবার ধারণা কেবল গ্রীষ্মেই পানিশূন্যতা হয়। যা ঠিক নয়। ঠান্ডা আবহাওয়ায় কম ঘামের জন্য পানি পানের পরিমাণও কমে যায়। আর এই কম পানি পানের অভ্যাস থেকেই পানিশূন্যতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। বোল্ড স্কাইয়ের প্রতিবেদনে অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতের সময় প্রায়ই অলসতা ধরে পায় আমাদের। ফলে এ সময় পরিশ্রম কম করতে পছন্দ করি আমরা। এ কারণে ঘামও হয় না, আর পানিও পান করা হয় না। যা থেকে পানিশূন্যতা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
পানিশূন্যতাকে গুরুত্ব সহকারে নেয়া উচিত। তা না হলে এটি অনেক গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। কিডনি রোগ, হার্টের সমস্যাসহ ছোট ছোট নানা ধরনের রোগ রয়েছে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে। এবার তাহলে শীতকালে পানিশূন্যতার লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
পানিশূন্যতার লক্ষণ: শীতকালে শরীরে পানির অভাব হলে মাথা ঘোরা ও অজ্ঞান হওয়ার সমস্যা দেখা দেবে। ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব হতে পারে। অনেক সময় মাথাব্যথাও হবে। প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাবে, এর রং গাঢ় হলুদ হবে। পানির অভাব পরিপাকতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যও হতে পারে। অনেকেরই পানিশূন্যতা থেকে মুখ শুষ্ক হয় ও ঠোঁট ফাটে এবং ত্বক শুষ্ক, প্রাণহীন হয়ে যায়।
পানিশূন্যতা এড়াতে করণীয়: শীতেও অন্যসব ঋতুর মতো সারাদিন প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এ জন্য সঙ্গে একটি পানির বোতল রাখতে পারেন। প্রয়োজনে একটু গরম পানি রাখতে পারেন। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণ ফল ও সবজি রাখতে হবে। এতে শরীরে তরল খাদ্য উপাদান প্রবেশ করবে। যেমন শসা, তরমুজ, কমলা, গাজরের মতো ফল ও সবজি খেতে পারেন।
লবণ বেশি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা থেকেও পানিশূন্যতা হতে পারে। এ জন্য লবণ খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিতে পারেন বা পরিমাণে কম খেতে পারেন। এতে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। গরম চা, কফি ও স্যুপ ইত্যাদি পান করতে পারেন। এসব আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে। এতে বেশি চিনি যোগ করা যাবে না। শীতে অ্যালকোহল ও ক্যাফিন গ্রহণ করা যাবে না। এসব শরীরকে ডিহাইড্রেট করে। এছাড়া যদি অন্য কোনো স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা থাকে যেমন ডায়াবেটিস, তাহলে পানিশূন্যতার ঝুঁকি বেশি থাকবে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।