একবার ধান রোপণ করলে ফসল হবে টানা ৫ বছর!

0
481

চীনের ইউনান প্রদেশের মেনহাই কাউন্টির ডেপুটি মেয়র কং ইয়াং সম্প্রতি সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের একটি দলের সঙ্গে আলোচনাকালে বলেছেন, বাংলাদেশ যদি খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও বাড়াতে চায়, আমরা আমাদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে প্রস্তুত। বাংলাদেশ ফসল উৎপাদনব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে খরচ ও শ্রম কমাতে চীনা বহুবর্ষজীবী ধান চাষ করতে পারে।

এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষকরা শুধু একবার জমিতে ধান রোপণ করবে, এরপর টানা ৩-৫ বছর ফসল আহরণ করতে পারবে। এই সময়ে বীজ কেনা, চারা দেওয়া, লাঙল দেওয়া ও চারা রোপণের মতো সাধারণ কৃষিকাজগুলো করার প্রয়োজন হয় না।

ইতোমধ্যে, ইউনান ক্রপ ভ্যারাসিটি অ্যাপ্রুভাল কমিটি ২০১৮ সালে এটিকে অনুমোদন দিয়েছে এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এটিকে একটি আন্তর্জাতিক কৃষি উদ্ভাবন প্রযুক্তি হিসেবে নির্বাচিত করেছে। চীনের বাইরে ২০১৮ সাল থেকে লাওস, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বহুবর্ষজীবী ধান প্রযুক্তির পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

প্রথাগত মৌসুমি ও বহুবর্ষজীবী ধান উৎপাদন পদ্ধতির মধ্যে তুলনা ব্যাখ্যা করে চীনা কর্মকর্তারা বলছেন, ‘মৌসুমি ধানের উৎপাদন প্রক্রিয়া জটিল। এর জন্য লাঙল, নিড়ানি, বীজবপন, রোপণ, ফসল কাটা ও শ্রমিক ব্যবহারের মতো কষ্টসাধ্য কাজ করা প্রয়োজন হয়।’

‘অন্যদিকে, বহুবর্ষজীবী ধান উৎপাদন প্রক্রিয়া সহজ। পরবর্তী মৌসুমে যেহেতু ফসল কাটার আগে শুধু শস্য আহরণের প্রয়োজন হয়, তাই শারীরিক পরিশ্রমও অনেক কমে যায়। ফলে উৎপাদন খরচও কম হয়।’

বহুবর্ষজীবী ধান উৎপাদন প্রযুক্তি সম্পর্কে গাজীপুরের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএসএম মাসুদুজ্জামান বাংলাদেশে বহুবর্ষজীবী ধান উৎপাদনে চীনা প্রযুক্তির সাফল্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এ প্রযুক্তিতে তার উন্নত গবেষণা রয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য; বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চল এবং সুনামগঞ্জ জেলার কিছু হাওর এলাকায় খুবই কার্যকর হতে পারে।’

তিনি দাবি করেছেন, ‘তিনি তার গবেষণায় দেখেছেন বহুবর্ষজীবী ধান গাছের জীবনকাল ৫ বছরেরও বেশি বাড়ানো যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ১০ বছরেও আর বেশি সময় ধরে কৃষকদের আর ধান রোপণ করতে হবে না।’

Facebook Comments Box

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here