মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজারে অর্থের জোগান কমাতে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে নীতি সুদহার। তবে কমানো হয়েছে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য। আর ডলারের দর ধীরে ধীরে বাজারমুখী করার ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের মুদ্রানীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক আশা করলেও বড় ধরনের প্রভাব পড়েনি মূল্যস্ফীতিতে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দাবি, মূল্যস্ফীতি বাড়ার প্রবণতা থেমেছে। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি খুব বেশি কমেছে তা বলা যাবে না। তবে এটা বাড়ার যে প্রবণতা ছিল, সেটা কমেছে।
অনেকটা প্রথম দফার পথেই হাঁটলেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর। আবারও বাড়ানো হলো নীতি সুদহার। ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে রেপো রেট এখন দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশে। এর সঙ্গে ১ পয়েন্ট কমিয়ে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১০ শতাংশ।
আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, এবার পলিসি রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। ৭ দশমিক ৭৫ থেকে ৮ শতাংশে এসেছে। মুদ্রানীতি কঠোর করেছি আমরা। বেসরকারি খাতে প্রবৃদ্ধি কমানো হয়েছে। উদ্দেশ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছিল বাজারের হাতে ছেড়ে দেয়া হোক ডলারের দর। এটি আংশিক মেনে মুদ্রাটির দাম নির্ধারণে বিশেষ পদ্ধতি ‘ক্রলিং পেগ’ প্রয়োগের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যাতে ধীরে ধীরে বাজারের দরের কাছাকাছি নেয়া হবে মার্কিন কারেন্সির মূল্য। আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আমরা ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছি। বিনিময় হার কত হবে, সেটা নির্ধারণ করবে এটা। এতে মুদ্রা এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল হবে।
ইসলামী ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়ে পড়াসহ ব্যাংক খাতের অনিয়ম নিয়ে সরাসরি উত্তর দেননি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। দায় চাপান কাঠামোগত দুর্বলতার। তিনি বলেন, কাঠামোগত সমস্যার কারণে এটা হয়েছে। সেটা সমস্যার চেষ্টা করছি আমরা। এজন্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। বরাবরের মতো পাহাড়সম খেলাপি ঋণ আদায়ে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর।