দেশে এই প্রথম ডেঙ্গু টিকার সফল পরীক্ষা

0
131

প্রথমবারের মতো দেশে ডেঙ্গু রোগের টিকার সফল পরীক্ষা হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিনের গবেষকেরা এ টিকার পরীক্ষা করেছেন।

পরীক্ষা করে দেখা গেছে ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরনের বিরুদ্ধেই এ টিকা কার্যকর। টিকার এই সফল পরীক্ষা নিয়ে একটি প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক সাময়িকী ল্যানসেটে গতকাল বুধবার প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর টিকা টিভি-০০৫ টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা হয়েছে ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ। যা শেষ হয় ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি।

পরীক্ষায় অংশ নেন ১৯২ জন, তারা সকলেই স্বেচ্ছায় অংশ নেন। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১৮-৫০ বছর ( ২০ জন পুরুষ এবং ২৮ জন মহিলা), কিশোর ১১-১৭ বছর (২৭ জন পুরুষ এবং ২১ জন মহিলা), শিশু ৫-১০ বছর (১৫ জন পুরুষ এবং ৩৩ জন মহিলা), এবং ছোট শিশু ১-৪ বছর (২৯ জন পুরুষ এবং ১৯ জন মহিলা), এই চারটি বয়সের শ্রেণিতে বাছাই করে টিকা বা প্লাসিবো করা হয়। অর্থাৎ প্রতি দলে ৪৮ জন করে অংশগ্রহণ করেছিল। এসব ব্যক্তির কারও কারও আগেই ডেঙ্গু হয়েছিল আবার কারও হয়নি। অংশগ্রহণকারীরা সবাই ছিলেন বাংলাদেশি।

টিকার বেশির ভাগ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছিল সামান্য। এর মাঝে অন্যতম ছিল ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ। ১৪৪ জন টিকা গ্রহণকারীর ৩৭ জনের (২৬%) এবং ৪৮ জন প্ল্যাসিবো প্রাপকের মধ্যে ৬ জনের (১২%) ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছিল ফুসকুড়ি। টিকা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে জ্বর ছিল ৭ জনের (১৪৪-এর ৫%) ক্ষেত্রে এবং আরও ৭ জন গিঁটে ব্যথা (১০৮-এর ৬%) অনুভব করেছেন। টিকা গ্রহণের ১৮০ দিন পর সকল অংশগ্রহণকারীর (১৪২ জন) মাঝে বেশির ভাগ সেরোটাইপের (ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩, ডেন – ৪) বিপরীতে সেরোপজিটিভ দেখা গেছে।

টিকার গবেষকদের একজন আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, যারা টিকা নিয়েছেন তাদের আমরা ২০২০ সাল পর্যন্ত দেখেছি। তাদের কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি।

তিনি বলেন, এই টিকার একটি একটি ডোজই সুরক্ষা দিতে পারে। তবে আরও গবেষণষার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ বাংলাদেশে দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল বা পরীক্ষা হয়েছে। এই টিকাটি ৪২টি বিভিন্ন ধাপের ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে বিশ্বের নানা দেশে। ভারতের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশে এ বছর এখন পর্যন্ত এক লাখ ৯৬ হাজার ৮৩১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাই বলছেন, এর বাইরে অন্তত চার গুণ বেশি মানুষ এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এ বছরের আগে দেশে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই বছরও টিকা পাওয়া মানুষগুলো সুরক্ষা পেয়েছেন।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here