পাকিস্তানে সরকার গঠনের পথে নওয়াজ-বিলাওয়াল, কী করবে পিটিআই

0
76

নানা নাটকীয়তার পর পাকিস্তানে সরকার গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈঠকের পর বিবৃতিতে এ কথা জানায় দল দুটি।

ইমরান খানকে ঠেকাতে ও জোট সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।

রোববার রাতে নওয়াজের পক্ষে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে লাহোরে পাকিস্তান পিপলস পার্টি পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির বাসভবনে যান শাহবাজ শরিফ। দেশটির জাতীয় নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন দল দুটির নেতারা। ওই বৈঠকে দেশকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে রক্ষায় দুই পক্ষের মধ্যে মতৈক্য হয়েছে বলে পিএমএল-এনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে পিপিপি বলছে, বৈঠকে সরকার গঠনে দলটির সহযোগিতা চেয়েছে পিএমএল-এন। প্রস্তাবটি নিয়ে সোমবার দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

এদিকে নির্বাচনের ফলপ্রকাশে দেরি হওয়ায় অনিয়ম কারচুপির অভিযোগ তোলে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ ও পেশোয়ারসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করছেন পিটিআই, জেআই ও জেইউআই-এফ-এর হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক।

পিটিআই অভিযোগ করেছে, তাদের অনেক প্রার্থী নির্বাচনে জিতলেও ফলাফলে কারচুপি করা হয়েছে। ইসলামাবাদ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক কামাল হায়দার বলেছেন, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছে, এমন তিনটি আসনে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, যদি আইনি উপায়ে এর নিষ্পত্তি না করা হয়, তাহলে এই বিক্ষোভ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সম্ভবত একটি আন্দোলনে পরিণত হতে পারে।

এই ধরনের স্থগিতাদেশের কারণে পরবর্তী সরকার গঠনে বিলম্ব হবে বলেও মনে হচ্ছে বলে জানান কামাল হায়দার। পিটিআই সমর্থকরা বলছেন, তারা চুপ করে বসে থাকবেন না এবং জনগণ তাদের দলের প্রতি যে ম্যান্ডেট দিয়েছেন তা চুরি হতে দেবেন না।

পিটিআই নেতাকর্মী যুক্তি দেখিয়ে বলছেন, নির্বাচনের দিন ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার ঘটনায় দেখিয়েছে যে, রাষ্ট্র কীভাবে ফলাফলের ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, যে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এর সাথে সম্পূর্ণভাবে জড়িত এবং এটা দুঃখজনক। তাদের জনগণের ভোটকে সম্মান করা উচিত।

পিটিআই স্পষ্ট করেই বলছে, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অন্তত ১৮টি আসনের ফলাফল প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা পরিবর্তন করেছেন। ওই আসনগুলো পিটিআই জিতেছে।
পার্টির মহাসচিব ওমর আইয়ুব এক্স-এ এক পোস্টে বলেছেন, জনগণ পিটিআইকে যে ম্যান্ডেট দিয়েছে তা এই দুর্নীতিবাজ, মেরুদণ্ডহীন আমলারা চুরি করছে।

কারচুপির অভিযোগ নিয়ে আদালতে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে পিটিআই। এদিকে নওয়াজের পিএমএলএন কারচুপির অভিযোগ মোকাবিলা করার জন্য একটি আইনজীবী দল গঠন করেছে।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। নজিরবিহীন বিলম্বের পর রোববার ২৬৪টি আসনে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০১ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৯৩ জনই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই-সমর্থিত। এরপরই পিএমএল-এন ৭৫ আসনে, পিপিপি ৫৪ ও এমকিউএম ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে ১৭টি আসন। জাতীয় পরিষদে সরকার গঠনের জন্য ১৩৪টি আসন প্রয়োজন।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here