প্রচলিত বাজারে পোশাক রফতানিতে ভাটা, আশার আলো নতুন বাজারে!

0
41

নানা জটিলতা এবং রাজনৈতিক সমীকরণের কবলে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি ক্রমশ কমছে। একই সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি আসছে না ইউরোপ-কানাডার মতো প্রচলিত বাজারেও। তবে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা রেকর্ড ছাড়িয়ে আশার আলো দেখাচ্ছে নতুন বাজার — চীন, রাশিয়া, তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্য।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রফতানি কমেছে ২.৫৮ শতাংশ। আগের অর্থ বছরের এ সময়ে ৫ হাজার ৬০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি হলেও এ বছর তা ৫ হাজার ৪৬৪ মিলিয়নে নেমে এসেছে।

অথচ যুক্তরাষ্ট্রকে ধরা হয় বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার। তার পাশাপাশি ইউরোপ এবং কানাডার মতো প্রচলিত বাজারেও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি মিলছে না। এ সময় ইউরোপে পোশাক রফতানি বেড়েছে মাত্র ৩.২৭ শতাংশ এবং কানাডায় বেড়েছে ১.৮১ শতাংশ, যা গার্মেন্টস শিল্পের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশকে পিছিয়ে রাখছে।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে কমেছে পোশাক বিক্রি। এতে বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনাও কমিয়েছে দেশটি। শুধু বাংলাদেশ নয়, চীন ও ভিয়েতনাম থেকেও পোশাক কেনা কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ।

বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন,
বাংলাদেশ ২০৩০ সাল নাগাদ যে ১০০ বিয়িলন ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, সেটি পূরণ করতে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্ডার মিলছে না। মূলত চলমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের দেশগুলোতে পণ্যের চাহিদা কমে গেছে, যার প্রভাব পড়েছে অন্যান্য দেশের পণ্য রফতানিতে।

এদিকে, প্রচলিত বাজারগুলোতে নানা সংকট সত্ত্বেও বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের জন্য আশার আলো হিসেবে দেখা দিয়েছে চীন, রাশিয়া কিংবা তুরস্কের মতো অপ্রচলিত বাজার। গত ১০ মাসে এসব নতুন বাজারে ৬ হাজার ৩০২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে বছরে তুরস্কে রেকর্ড ৬৩.৩৫ শতাংশ, চীনে ৪৪.৭৬ শতাংশ, সৌদি আরবে ৪৭.১৯ শতাংশ, আরব আমিরাতে ৩৬.৫৪ শতাংশ, রাশিয়ায় ২৫.৬৫ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ২১ শতাংশ এবং জাপানে ৭.১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে দাবি বিজিএমইএর।

ইউরোপ-আমেরিকার মতো প্রচলিত বাজারগুলোতে তৈরি পোশাক রফতানি বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন বাজার সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি মিশনগুলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি অর্জনে এসব মিশন কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি বলে অভিযোগ গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের। বিদেশি মিশনগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখলে দেশের তৈরি পোশাক রফতানি লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব।

বিজিএমইএর পরিচালক গাজী মোহাম্মদ শহীদউল্লাহ বলেন,
রফতানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নতুন বাজারগুলো ধরতে হবে। এখানে থিতু হতে হবে। আর এজন্য সরকার এবং শিল্প মালিকদের উদ্যোগ নিতে হবে।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here