ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক মাসের বেশি সময় ধরে নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না হাসপাতালও। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) গাজার বৃহত্তম আল-শিফাসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। হামলায় বহু হতাহত হয়েছেন।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত নরওয়ের চিকিৎসক মেডস গিলবার্ট। দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানান।
শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক ভিডিও বার্তায় এই চিকিৎসক বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন, মিস্টার ব্লিঙ্কেন, আপনারা কি আমাকে শুনতে পাচ্ছেন? ইউরোপের বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টদের বলছি, আপনারা কি আমাকে শুনতে পাচ্ছেন?’
এরপর হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে মেডস গিলবার্ট বলেন,
আপনারা কি আল-শিফা হাসপাতাল থেকে আসা চিৎকার শুনতে পাচ্ছেন? নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের চিৎকার কি শুনতে পাচ্ছেন? শরণার্থীরা আশ্রয় নিচ্ছেন, নিরাপদ জায়গা খোঁজার চেষ্টা করছেন। আর এর মধ্যেই আজ (শুক্রবার) সকালে ইসরাইলি হানাদার বাহিনীর বোমা হামলা হয়েছে!
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যে হাসপাতালকে বলা হয় মানবিকতার উপাসনালয়, সেখানেই হামলা করা হয়েছে। সেই হাসপাতালের ভেতরেই হামলা করা হয়েছে। আপনারা কবে থামবেন? এই হামলা কবে থামাবেন ?
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে রয়টার্স। এতে দেখা গেছে, গাজা আল-শিফা হাসপাতাল এলাকায় শিশুসহ বেশ কয়েকটি নিথর দেহ পড়ে আছে। এছাড়াও আহতদের যন্ত্রণায় ছটফট করতেও দেখা গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, হাসপাতালে ইসরাইলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে। রয়টার্সের এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, ‘হাসপাতালের বহির্বিভাগে হামলা চালিয়েছে। সেখানে ইসরাইলের ভয়ে বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ রাতে ঘুমাতেন।
হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে গত মাসে যুদ্ধ শুরুর পর আল-শিফা হাসপাতালে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নেন।
শুক্রবার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা নিউজ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজা ও পশ্চিম তীর মিলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ২০৮ জনে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ২৯ হাজার ৫০০ জন।
নিহতদের মধ্যে ১১ হাজার ২০৫ জন গাজার এবং পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে মারা গেছে আরও ১৮৩ জন। এছাড়া গাজায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৭ হাজার এবং পশ্চিম তীরে আহতের সংখ্যা আড়াই হাজারের অধিক।