প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ১ শতাংশ রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে ভুগে থাকেন। এটি সবচেয়ে পরিচিত প্রদাহজনিত বাতরোগ। মধ্যবয়স্ক নারীরা এতে আক্রান্ত হন বেশি। বাতরোগের মধ্যে এ রোগে পঙ্গুত্বের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। এ রোগের লক্ষণগুলো হচ্ছে, হাত-পায়ের ছোট সন্ধির অনেকগুলোতে একসঙ্গে ব্যথা, লালচে হয়ে যাওয়া বা ফুলে যাওয়া, ঘুম থেকে ওঠার পর সকালে এক ঘণ্টার বেশি সন্ধিগুলোতে জড়তা অনুভব করা।
এছাড়া আক্রান্ত সন্ধি ধীরে ধীরে বাঁকা ও শক্ত হতে থাকে, শরীরের নানা স্থানের ত্বকে গুটি দেখা দিতে পারে, কখনো কখনো সন্ধি ছাড়াও চোখ, ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড, স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হয়। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে রক্তে রিউমাটয়েড ফ্যাক্টর বা অ্যান্টি সিসিপি অ্যান্টিবডি টেস্ট করে পজিটিভ পাওয়া গেলে বুঝতে হবে এটি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস। এ ছাড়া এক্স-রেতে বিশেষ পরিবর্তন দেখা যায়।
এ বিষয়ে গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ও বাতরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রওশন আরা বলেন, যেকোনো বাতরোগের মতো এর চিকিৎসাপ্রণালি জীবনব্যাপী। চিকিৎসায় এ ধরনের রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ও পঙ্গুত্ব থেকে বাঁচা যায়। চিকিৎসার ধরন ও শুরুটা রোগের তীব্রতা ও জটিলতার ঝুঁকির ওপর নির্ভর করে। প্রথমে কিছুদিন ব্যথানাশক, স্টেরয়েড ইত্যাদি ব্যবহারের সঙ্গে নিয়ন্ত্রক ওষুধও শুরু করতে হবে। সাধারণত মিথোট্রেক্সেট এ রোগে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
এর বাইরে নানা গোত্রের আরও ওষুধ আছে, যা অবশ্যই বাতরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে নিতে হবে। এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশি। তাই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতেও কিছু ওষুধ সেবন করতে হয়। এ রোগীদের ফলোআপ খুবই জরুরি।
এ রোগে আক্রান্তরা গর্ভধারণ করতে পারবে কিনা, এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই রোগে গর্ভধারণে কোনো সমস্যা নেই। তবে কিছু ওষুধ আছে, যা সেবন করার সময় গর্ভধারণ নিরাপদ নয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই রোগীদের গর্ভধারণ করা যাবে না।