বিদেশের প্রলোভনে যুবকদের পাচার, ব্যাংক হিসাবে লেনদেন মুক্তিপণের টাকা

0
307

ফাঁদ পেতে বিদেশে নিয়ে যাওয়া যুবকদের লিবিয়ায় মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেয় পাচারকারী চক্র। এরপর চাওয়া হয় মুক্তিপণ। টাকা হাত বদল হয় দেশ থেকেই। এজন্য ব্যবহার হয় নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব নম্বর। আর এ কাজ করে কিছু অসাধু এজেন্ট ব্যাংকিং কর্মীরা।

গত বছর ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ায় মাফিয়াদের হাতে বিক্রি হয় মেহেরপুরের তিন যুবক। তাদের জিম্মি দশা থেকে ছাড়িয়ে নিতে পরিবারগুলো চার লাখ করে টাকা জমা দেয় কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। তার মধ্যে একটি রিকশাচালক ওমর মোল্লার। ওমরের নামে মেহেরপুরের বেসরকারি ব্যাংকে আছে একটি চলতি হিসাব। গত দুই বছরে সেখানে লেনদেন হয়েছে প্রায় ৬০ লাখ টাকা।

ওমর মোল্লা জানান, আমার দিনে আয় সাড়ে চারশ টাকা। তা দিয়ে চলে ছয়জনের সংসার। আমার অ্যাকাউন্টে কীসের টাকা লেনদেন হয়, কে টাকা পাঠায় এবং কীভাবে পাঠায় আমি কিছুই জানি না।

তিনি বলেন, আমার অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছিল আমার চাচাতো ভাই বিকাশ এজেন্ট সাইদুল মোল্লা। খোলার সময় বলেছিল যদি টাকা আসে তাহলে আমি যেন আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে আসি এবং সে টাকা নিয়ে আসবে। আর যদি সঙ্গে সঙ্গে টাকা দেয়া হয়, তাহলে আমি যেন সেই টাকা নিয়ে আসি। কথামতো আমি কয়েকবার আঙ্গুলের ছাপ এবং টাকা নিয়ে এসেছি।

সাইদুল মোল্লা জানান, বিকাশে যতটুকু ব্যবসা আছে আমি ততটুকুই করি। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আমি এত টাকা লেনদেন করিনি।

ভুতুড়ে লেনদেনের বেশকিছু ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে রাজবাড়ী ও মাদারীপুরের বেসরকারি ব্যাংকে। শাখা ব্যবস্থাপক রশিদুল হাসান বলেন, আমি কারও অ্যাকাউন্টের তথ্য দিতে পারব না। কারণ, গোপনীয়তা রক্ষা করি বলেই এই ব্যাংকে মানুষ টাকা রাখে।

মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল আহসান বলেন, এই বিষয়ের সঙ্গে যারা জড়িত আছে, সবাইকে শনাক্ত করবো এবং প্রশাসনের নজরে নিয়ে আসবো। এরপর বিজ্ঞ আদালত অ্যাকাউন্টগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

Facebook Comments Box

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here