মহামারির দ্বারপ্রান্তে গাজা

0
138

গাজায় সাত মাসের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির হামলার ফলে গাজায় ভয়াবহ খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া উপত্যকাজুড়ে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব। এমন পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম জানিয়েছে, মহামারির দ্বারপ্রান্তে গাজা।

সোমবার (১৩ মে) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অক্সফাম জানিয়েছে, রাফাহতে ইসরায়েলের স্থল অভিযান পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে। বর্তমানে গাজা উপত্যকাকে তারা মারাত্মক মহামারি প্রাদুর্ভাবের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।

সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজার পানি ও স্যানিটেশন অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া তাঁবুর বসতিতে অতিরিক্ত ভিড়, অপুষ্টি ও গরমের কারণে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে মহামারির প্রাদুর্ভাবের মারাত্মক ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, রাফাহতে ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে ইতোমধ্যে সাড়ে তিন লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এবং শিবিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এ ছাড়া সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাদ্য ও জ্বালানি সংকটও প্রকট হচ্ছে।

অক্সফামের কর্মীরা বলেন, গাজায় মানবসৃষ্ট বর্জ্যের স্তূপ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এ ছাড়া সেখানকার মানুষ নোংরা পানি পান করছে এবং শিশুদের নর্দমার পোকামাকড় কামড়াচ্ছে। ফলে হেপাটাইটিস এ এবং কলেরাসহ মহামারির আশঙ্কা বহুগুণে বাড়ছে। রাফাহতে ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে এ পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।

সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্যের পরিচালক সালি আবি খলিল বলেন, রাফাহ সীমান্তে ইসরায়েলের হামলার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। কেননা এটি কেবল বেসামরিক লোকদের হতাহতের আশঙ্কা সৃষ্টি করবে না, বরং এর ফলে বিপুলসংখ্যক লোককে সেখান থেকে সরে আসতেও বাধ্য করা হবে।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।

অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

Facebook Comments Box

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here