শিক্ষককে স্ট্যাম্প দিয়েও পেটানো যায়? তাও আবার এমনভাবে মারধর করা হলো শিক্ষক মারাই গেলো।
ঢাকার সাভারের হাজী ইউনুস স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর এক ছাত্র ‘এই মহাকর্ম ‘ সাধন করলো। স্কুল লাইফে আমাদের নানা অজুহাতে শিক্ষকদের হাতে মাইর খাওয়া লাগতো।
স্কুলে অনুপস্থিত থাকলে মাইর। পিছনের বেঞ্চে বসে বন্ধুর সাথে গুজুরগুজুর করলে মাইর। পরীক্ষায় ফেইল করলে বেতের দাগ বসে যেতো হাতের তালুতে। বোবা হইয়া বইসা থাকতাম কিছুক্ষণ। পড়া না পারলে তো বেইজ্জতির সাথে বেত্রাঘাত ফ্রি। কখনো কখনো দুপুরের মাইরের পর সন্ধ্যায় জ্বর উঠে যেতো।
ভয়ে বাসায় কিছু বলতাম না, যদি আবার বাসায় মারে। এক সকালের মাইরের ব্যথা ভুলে পরেরদিন সকালে স্যাররা ক্লাসে ঢুকলে উঠে দাঁড়িয়ে সালাম ঠুকেছি।
এখনকার পোলাপাইন মোটামুটি মহারাজা। তাদের গায়ে টাচ করা যায় না। করলে খবর আছে!
স্যারের চোদ্দগুষ্টি শেষ। স্যারদের-ম্যামদের গালাগালি হরহামেশাই করা যায়।
এখন স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো যায়, গালি দেওয়া যায়, নকলে ডিস্টার্ব করলে পরীক্ষা শেষে কিল-ঘুষি দেওয়া যায়। সামনে ইউনিক কিছু হবে…নিশ্চয়।
সমস্যাটা কোথায়?
পারিবারিক শিক্ষাটা এখন আর আগের মতো প্রবল নয় ততটাও, ‘মহারাণীদের সব সন্তান মহারাজা’, যেমন পারছে, চলছে চলুক।
মানুষের ভেতর ধর্মের প্রভাব কমে যাওয়ার সাথে নৈতিকতার বোধ ক্রমশ ধ্বংস হয়ে যাওয়া। এই কথা মানতে আমার আপত্তি নেই আমরা যতটা আধুনিক হচ্ছি, ধর্ম থেকে দূরে সরে যাচ্ছি, ততটা মানবিক থেকে পারমাণবিক হচ্ছি…ধ্বংস করা সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে। আর বিশেষ বিশেষ রাজনৈতিক ব্যাকাপ দিয়ে কিশোর গ্যাং তৈরী করাটা আমাদের হাল-ফ্যাশনের রাজনীতি।
একটা বোমা তৈরী হচ্ছে, আমরাই তৈরী করছি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র মিলে-জনসমাগমেই ব্লাস্ট হবে, কমবেশি আমরা সবাই আহত হবো… অপেক্ষা।
লেখক: মেহেরাব হোসাইন