এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটে হেরে ব্যাকফুটে রয়েছে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই সাকিব বাহিনীর। আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচটি বাঁচা-মরার তবে একইসঙ্গে আরও সমীকরণ মেলাতে হতে পারে টাইগারদের।
এবারের আসরটি এশিয়া কাপের ১৬তম আসর। তবে ওয়ানডে ফরম্যাটের ১৪তম। বাকি দুটি হয়েছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। সর্বশেষ ১৫তম আসরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ সামনে রেখে ওডিআই ফরম্যাটে হচ্ছে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের আসর। শক্তিমত্তা কিংবা পরিসংখ্যানে চোখ বুলালে এই একটা ফরম্যাটে টিম টাইগার্সের কিছুটা স্বস্তিতে থাকার কথা।
নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে তিনবার এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে টাইগাররা। কিন্তু প্রতিবারই একটুর জন্য শিরোপা ঘরে তোলা হয়নি। এবার সেই আরাধ্য স্বপ্নপূরণের আশায় ছিল সমর্থকরা। দেশ ছাড়ার আগে টাইগার অধিনায়ক সাকিবও তেমন কিছুর স্বপ্নই দেখিয়েছিলেন। কিন্তু টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই তারা লঙ্কানদের কাছে ৫ উইকেটে হেরে বসে। এতে করে শঙ্কা জাগে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেয়ার।
১৫তম আসরেও গ্রুপপর্বে আফগানদের মুখোমুখি হয়েছিল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। মূলত গ্রুপপর্বে তারা এবারের মতোই আফগান ও লঙ্কানদের মুখোমুখি হয়। আর সেখানে দুটি ম্যাচে হেরেই বিদায় হয়েছিল প্রথম রাউন্ডে। ভালো রাজস্ব আয়ের আশায় গত বছর থেকে এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তানকে একই গ্রুপে রাখা হয়। যাতে করে অন্তত দুটি, সর্বোচ্চ তিনটি ম্যাচ দেখার সুযোগ তৈরি হয়। এতে করে না চাইলেও বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তানকে ‘গ্রুপ অব ডেথ’ কে মেনে নিতে হচ্ছে। যে গ্রুপে সবচেয়ে বেশি নাজেহাল বাংলাদেশ।
তাই তো ভক্ত সমর্থকদের শঙ্কা গতবারের মতো এবারও কি গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় ঘটতে যাচ্ছে টাইগারদের। এমন প্রশ্ন মাথায় রেখেই মাঠে নামছেন সাকিবরা। আজ টাইগারদের একটাই পথ জিত নয়তো বাড়ির পথ ধরো। তবে ম্যাচ জিতলেই যে সুপার ফোর নিশ্চিত হবে বিষয়টি এমনও নয়। তার জন্য অবশ্য জটিল সমীকরণ মেলাতে হবে।
যে বিষয়টা নেই ‘গ্রুপ এ’ তে। কেননা সেখান থেকে ইতোমধ্যে প্রথম দল হিসেবে সুপার ফোরে চলে গেছে পাকিস্তান। এক ম্যাচ জয় ও এক ম্যাচ ড্রয়ে তিন পয়েন্ট বাবরদের। যেখানে ভারতের পয়েন্ট ১ ও নেপালের শূন্য। তাই শেষ ম্যাচে জয় কিংবা ড্রয়েই সুপার ফোরের টিকিট মিলবে ভারতের। তবে হারলে বিদায় নিতে হবে তাদের। এতে করে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে খেলা নেপাল চলে যাবে সুপার ফোরে।
তবে ‘গ্রুপ বি’ এর সমীকরণটা একেবারেই ভিন্ন। শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ একটি করে ম্যাচ খেলেছে। যেখানে শ্রীলঙ্কা জয় তুলে নিয়েছে। তারা ২ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে গ্রুপ টেবিলের শীর্ষে। তাই তো আজ বাংলাদেশের সামনে একটাই লক্ষ্য আফগানদের হারাও সুপার ফোরের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখো।
আফগানদের বিপক্ষে জয় তুলতে সক্ষম হলে সেরা চারে যেতে তাকিয়ে থাকতে হবে আফগানিস্তান-লঙ্কান ম্যাচের দিকে। ম্যাচটিতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা জিতলে দুই ম্যাচ হেরে ছিটকে যাবে আফগানরা। সুপার ফোর নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের।
আর যদি লঙ্কানরা হেরে যায় তবে গ্রুপের তিন দলই তখন একটি করে ম্যাচ জিতবে এবং পয়েন্ট সমান হয়ে গেলে পরের পর্বে যাওয়ার টিকিট হয়ে উঠবে রানরেট। সেখানে এশিয়া কাপের শুরুতেই বেশ পিছিয়ে যাওয়ায় সেরা চারও অনিশ্চিত টিম টাইগার্সের জন্য।
তবে সবার আগে আজ আফগান পরীক্ষায় পাস করতে হবে সাকিবদের। লঙ্কান দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে যেভাবে খড়কুটোর মতো ভেঙে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার, তাতে শঙ্কা থাকছেই। নিশ্চিতভাবেই দলে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে আজ। ঘুরে দাঁড়াতে হলে বড় ভূমিকা রাখতে হবে ব্যাটারদেরকেই।