আসন্ন রমজানে খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) আয়োজিত টিসিবির ফ্যামিলি স্মার্টকার্ড বিতরণ এবং সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
রমজান উপলক্ষে খেজুরসহ অন্যান্য পণ্য আমদানিতে শুল্ক কমানো হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন,
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শুল্ক কমাতে পারে না। তবে কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে অনুরোধ জানাতে পারে এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় তা করা হয়ে থাকে।
তবে রমজানে মানুষ যাতে খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সহজে কিনতে পারেন, সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, টিসিবির কার্ডধারীরা প্রতিমাসে একবার পণ্য নিশ্চিতভাবেই পাবেন। কারণ, তাদের নামে পণ্য নির্দিষ্ট করা থাকে। এই ১ কোটি কার্ডধারীর বাইরে থাকা নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে ভর্তুকি মূল্যে ট্রাকসেলে প্রতিদিন পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। এই ট্রাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য বিতরণ করা হয়ে থাকে। একটি ট্রাক থেকে ৩০০ জন পণ্য পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এর বেশি দিতে পারবে না। স্বাভাবিকভাবেই যারা আগে আসেন, তারা পাবেন। কিছু মানুষকে খালি হাতে ফেরত যেতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ট্রাকসেলের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। পাশাপাশি দেশের বড় শহরগুলোতে দেয়া যায় কি না, সে বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে। এতে আরও বেশি মানুষকে এই সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান,
সার্বিক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিসিবি কার্ডধারীদের বাইরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনার আলোকে রাজধানীতে ৩০টি ট্রাকসেলের মাধ্যমে সয়াবিন, পেঁয়াজ, আলু ইত্যাদি ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
আলুর বাজারদর সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আলুর বাজার দ্রুত অস্থিতিশীল হওয়ার পরপরই আমরা আমদানির অনুমতি দিয়েছি। এরপর ভারত থেকে আলু আসায় বাজারে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তা ছাড়া দেশের বাজারে নতুন আলুও আসতে শুরু করেছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাজারে নতুন আলু পুরোপুরি আসবে। এতে আলুর দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।’
স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, টিসিবি একটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করে যাচ্ছে।
সরকারের এই মহতী উদ্যোগ সফল করতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন। এ ছাড়া চলতি মাসের মধ্যে ২০ লাখ স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা সম্ভব হবে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এসময় টিসিবির চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মঞ্জুরসহ অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন।