কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ায় মাঠে মাঠে চলছে আমনধান সংগ্রহের কাজ। এরই মধ্যে চলতি বোরো মৌসুমে বোরোধান আবাদের লক্ষ্যে বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক। এ মৌসুমে এ উপজেলায় বোরোর বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০৭ হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বীজতলা তৈরি হবে বলে আশা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এ ছাড়া বীজতলা তৈরিতে কিছু বিষয় মেনে চলতে হয়। তাহলে সুস্থ, সবল চারা পাওয়া যায়। এ বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে স্থানীয় কৃষি অফিস।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, অগ্রহায়ণ মাস বোরো ধানের বীজতলা তৈরির উপযুক্ত সময়। রোদ পড়ে এমন উর্বর ও সেচ সুবিধাযুক্ত জমি বীজতলার জন্য নির্বাচন করা বাঞ্ছনীয়। চাষের আগে নিয়ম অনুযায়ী জৈব সার দিয়ে ভালোভাবে জমি তৈরি করে নিতে হবে।
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে আধুনিক চাষ যন্ত্রের পাশাপাশি প্রাচীন পদ্ধতিতে গরু দ্বারা চাষ করে কিছু কিছু এলাকায় বীজতলার জন্য জমি প্রস্তুত করছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলার কিছু কিছু মাঠে এখন কৃষক রোপা আমন সংগ্রহের পাশাপাশি বোরোর বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কৃষকরা বলছেন বোরর বীজতলা তৈরির এখন ভরা মৌসুম।
কথা হয় কৃষক রুস্তম আলী, আশরাফ উদ্দিন, আবু হানিফ ও জজু মিয়ার সঙ্গে। তারা জানান, আমনধান সংগ্রহের পাশাপাশি বোরো ধানের বীজতলা তৈরিতে কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসব বীজতলার বোরো ধানের চারা রোপণ উপযোগী হলে বীজতলা থেকে উত্তোলন করে চারাগুলো পরবর্তীতে জমিতে আবাদ করা হবে। এ বছর বোরোর বীজতলা তৈরি উপযোগী আবহাওয়া রয়েছে।
স্থানীয় কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এ বোরো মৌসুমে বোরোধান আবাদের লক্ষ্যে তিনি ২২ শতক জমিতে বোরোর বীজতলা তৈরি করেছেন। এ বছর বোরোর বীজতলা তৈরির জন্য আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে ধানের চারা এ বছর ভালো হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা কালবেলাকে বলেন, অগ্রহায়ণ মাস বোরো ধানের বীজতলা তৈরির উপযুক্ত সময়। কৃষকদের আদর্শ বীজতলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রোদ পড়ে এমন উর্বর এবং সেচের সুবিধা আছে এমন জমি আদর্শ বীজতলার জন্য নির্বাচন করা জরুরি। আদর্শ বীজতলায় বেডের মাঝখানে নালা থাকে যার ফলে আগাছা দমন, সার প্রয়োগ, সেচ দেওয়া, বালাই দমনসহ অন্যান্য আন্তঃপরিচর্যা সহজ হয় এবং সুস্থ সবল চারা উৎপাদন হয়। স্থানীয় পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে বীজ কম লাগে। ফলে খরচও কম হয়। হিসাব মতে, ১ শতক বীজতলার চারা দিয়ে প্রায় ২০ শতক ধানের জমি রোপণ করা যায়।