এক মাসে ১৩ হাজার নিবন্ধন

0
125

সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর এক মাস পার হয়েছে। প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা এবং সমতা— এ চার স্কিম নিয়ে সরকার সর্বজনীন পেনশন চালু করেছে সরকার। গত ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেন প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ এ এক মাসে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চাঁদা পরিশোধ করেছেন প্রায় ১৩ হাজার মানুষ। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ সাড়ে ৭ কোটি টাকার ওপরে। প্রথম এক মাসে জমা হওয়া চাঁদার অর্ধেকের বেশি দিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা।

দেখা যায়, প্রধামন্ত্রীর উদ্বোধনের পর প্রথমদিনেই নিবন্ধনের পর ১ হাজার ৭০০ জন চাঁদা পরিশোধ করেন। প্রায় ৯০ লাখ টাকা চাঁদা জমা দেন তারা। আর প্রথম এক সপ্তাহে চাঁদা জমা দেন ৮ হাজার ৫৫১ জন এবং তাদের চাঁদার পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৩৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

লক্ষনীয় বিষয়, প্রথমদিকে সর্বজনীন পেনশনে মানুষের যে হারে সাড়া পাওয়া যায়, পরবর্তীতে তা কিছুটা কমে আসে। ফলে প্রথম মাস শেষে সর্বজনীন পেনশনে চাঁদা পরিশোধকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৯৯৯ জন। আর তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ৭ কোটি ৭২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা।

তবে চাঁদা দেয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা। প্রগতি স্কিমে নিবন্ধন করে প্রথম মাসে চাঁদা পরিশোধ করেছেন ৬ হাজার ২০৩ জন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ৪ কোটি ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ টাক। সর্বজনীন পেনশনে জমা হওয়া চাঁদার ৫২ দশমিক ৮৯ শতাংশ জমা দিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা।

অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তি যেমন- কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি ইত্যাদি পেশার ব্যক্তিদের জন্য চালু করা হয়েছে সুরক্ষা স্কিম। এ স্কিমে চাঁদা পরিশোধ করেছেন ৫ হাজার ৩৬ জন। তাদের চাঁদার পরিমাণ ২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।

যাদের বর্তমান আয়সীমা বাৎসরিক সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা তাদের জন্য সমতা স্কিম। এই স্কিমে এক মাসে চাঁদা দিয়েছেন ১ হাজার ৩৬২ জন। তাদের চাঁদার পরিমাণ ২২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। সমতা স্কিমের মাসিক চাঁদার হার ১ হাজার টাকা। এর মধ্যে স্কিম গ্রহণকারী চাঁদা দেবেন ৫০০ টাকা এবং বাকি ৫০০ টাকা দেবে সরকার।

আর প্রবাসীদের জন্য চালু করা প্রবাস স্কিমে এক মাসে চাঁদা দিয়েছেন ৩৯৮ জন। তাদের চাঁদার পরিমাণ ৮২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা গণমাধ্যমকে বলেন, এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৯৯৯ জন চাঁদা পরিশোধ করেছে। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ৭ কোটি ৭২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা।

চাঁদার টাকা বিনিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক মাসে জমা পড়া চাঁদার পরিমাণ খুব বেশি না। টাকার অঙ্ক বাড়লে আমরা বিনিয়োগে যাবো।

প্রসঙ্গত, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বছরের ঊর্ধ্ব বয়স্ক একজন সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর চাঁদা দিয়ে আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। পেনশনে থেকে ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে পেনশনারের নমিনি পেনশন স্কিম গ্রহণকারীর ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত পেনশন পাবেন।

অপরদিকে চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বৎসর চাঁদা দেওয়ার আগেই মারা গেলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ ফেরত পাবেন নমিনি। আর চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেবল তার জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাবে। মাসিক পেনশন বাবদ পাওয়া অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে ও পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করে কর রেয়াত পাবেন।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here