গুদামে পচে যাচ্ছে আলু, লোকসানের শঙ্কায় হিলির আমদানিকারকরা

0
24

লাভের আশায় আলু আমদানি করে এখন পুঁজি উঠানোই যেন দায় হয়ে পড়েছে হিলির আমদানিকারকদের। প্রতি বস্তায় মিলছে ৫ থেকে ১০ কেজি পচা আলু। আবার অতিরিক্ত গরমেও পচে যাচ্ছে গুদামে রাখা আলু।

সারা দেশের মত দিনাজপুরের হিলিতেও তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। গত তিনদিন ধরে তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রির ওপরে উঠেছে। তীব্র গরমের কারণে ভারত থেকে আলু আমদানি করে বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা।

দাম বেশি ও ক্রেতা সংকটের কারণে আমদানি করা আলু বিক্রি না হওয়ায় গুদামজাত করেছেন আমদানিকারকরা। তীব্র গরমের কারণে পচতে শুরু করেছে এসব আলু, যা ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

আবার আমদানি করা প্রতিটি ৫০ কেজির বস্তা থেকে ৫ থেকে ১০ কেজি পচা আলু বের হচ্ছে। এতে বাড়তি ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। তদের প্রতিনিধি মসিউর জানান, গুদামে যে আলু রাখা আছে, তা গত সাত দিন আগে আমদানি করা হয়েছে। এসব আলু মূলত বন্দর থেকে বিক্রি হয়ে থাকে; কিন্তু ক্রেতা সংকটে এবার তা হয়নি।

আলুগুদামের পাশের দোকানগুলোর ব্যবসায়ীরা জানান, গত কদিন ধরে পচা আলুর গন্ধে দোকানে বসা যাচ্ছে না। যদি একটু বৃষ্টি হয় এবং গরম কমে, তাহলেই কেবল এসব আলু ভালো থাকবে।

আলু বাছাই কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা বলেন, আমদানিকারকদের গুদামে আলু পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শ্রমিকরা গুদামে রাখা বস্তা থেকে আলু ঢেলে বাছাই করে আলাদা করছে। এতে তাদের প্রতিদিন আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা রোজগার হয়; তা দিয়ে সংসার চলছে।

একটি আলুর গুদামের ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে আলুর সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে আলু আমদানি করছেন আমদানিকারকরা। কিন্তু দেশের বাজারে আলুর দাম কম হওয়ায় ও তুলনামূলক আমদানি করা আলুর দাম কিছুটা বেশি থাকায় এসব আলু তেমন একটা বিক্রি হচ্ছে না। এসব আলুর ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে; পাইকাররাও ঠিকমতো আসছে না।

এতে বন্দরে বিক্রি না হওয়ায় আমদানি করা আলু বন্দর থেকে খালাস করে নিজস্ব গুদামে রাখা হয়েছে জানিয়ে সিরাজুল ইসলাম বলেন,

গত কদিন ধরে প্রচণ্ড গরমে আলু পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যা ফেলে দিতে হচ্ছে। প্রতিটি বস্তা থেকে প্রতিদিন দুই থেকে তিন কেজি করে আলু পচা বের হচ্ছে। আবার এসব আলু শ্রমিক লাগিয়ে খারাপ ও ভালো আলু আলাদা করতে হচ্ছে। আলু বাছাই করতে গিয়ে গুনতে হচ্ছে বাড়তি খরচ।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানি অব্যাহত রয়েছে। আলু যেহেতু কাঁচাপণ্য ও দ্রুত পচনশীল, তাই কাস্টমসের প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত যেন আমদানিকারকরা এসব আলু খালাস করে নিতে পারেন, সেজন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে।

দিনাজপুরের আবহাওয়া অধিদফতরের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গত তিনদিন ধরে এ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪০ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অবস্থান করছে। আগামী আরও কয়েকদিন তা অব্যাহত থাকবে।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here