হামাসের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর থেকে ইসরাইলের ওপর ঋণের বোঝাও বাড়ছে ধারাবাহিকভাবে। সংঘাতের মাত্র এক মাসে ইসরাইলিদের ঋণ বেড়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি শেকেলস বা ৭৮০ কোটি মার্কিন ডলার।
ইসরাইলি অর্থ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সোমবার (১৩ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এরপর গাজায় পাল্টা হামলা চালাতে গিয়ে সামরিক খাতে ব্যয় বাড়াতে বাধ্য হয় ইসরাইল। এছাড়া সীমান্তের কাছাকাছি থাকা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং হামাসের হাতে ক্ষতিগ্রস্ত ও জিম্মিদের পরিবারগুলোকে মোটা অংকের ক্ষতিপূরণ দিতে হয় তেল আবিবকে। ব্যাপকভাবে কমে যায় সরকারের আয়ও।
সব মিলিয়ে গেল অক্টোবরে ইসরাইলের বাজেট ঘাটতি দাঁড়ায় রেকর্ড ২ হাজার ২৯০ কোটি শেকেল, যেখানে সেপ্টেম্বরেও এর পরিমাণ ছিল ৪৬০ কোটি শেকেল।
ইসরাইলি অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, ‘যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত চাহিদাসহ অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক ও বেসামরিক সহায়তা কার্যক্রমে সরকারকে অর্থায়ন অব্যাহত রাখবে তারা।’
তবে অর্থনীতিবিদদের ধারণা, এসব কারণে ইসরাইলের বাজেট ঘাটতি এবং জিডিপির সঙ্গে ঋণ অনুপাতের পার্থক্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে, যা ২০২৪ সালজুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে।
এর আগে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার সামরিক বাহিনীর রিজার্ভ সদস্য তাদের চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে সামরিক দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত হচ্ছেন। এর ফলে অর্থনীতির কিছু অংশ স্থবির হয়ে পড়েছে। ইসরাইলের প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি প্রযুক্তি শিল্প হঠাৎ করে ধীর হয়ে গেছে। একটি বড় অফশোর প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদনও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
দ্য ইকোনমিস্টের মতে, অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের দেশগুলোর মধ্যে গত বছর চতুর্থ সেরা পারফর্মিং অর্থনীতি ছিল ইসরাইল। কিন্তু যুদ্ধের কারণে সেই অগ্রগতিতে ভাটা পড়েছে।
যদিও গোল্ডম্যান স্যাকস সম্প্রতি এক নোটে জানিয়েছে, ইসরাইলের সামগ্রিক আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী আছে। ব্যাংক অব ইসরাইলের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার রয়েছে। এটি ইসরাইলের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি।