৫৯ বছর পর রাজশাহী-মুর্শিদাবাদ নৌপথে পণ্য আনা-নেওয়া শুরু

0
94

রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে ভারতের মুর্শিদাবাদে নৌপথে ৫৯ বছর পর পণ্য আনা–নেওয়া শুরু হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ এলাকায় পদ্মা নদীতে এই নৌপথের উদ্বোধন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

উদ্বোধনের পর আজ সাড়ে ১১ টন গার্মেন্টস তুলাবাহী নৌযান সুলতানগঞ্জ থেকে মুর্শিদাবাদের ময়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এর আগে গতকাল রোববার বেলা ২টার দিকে একটি খালি জাহাজ ময়ার উদ্দেশে সুলতানগঞ্জ ছেড়ে যায়। এটি আজ বিকেলে পাথর নিয়ে আসবে।

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা নৌপথের উদ্বোধন ঘিরে সুলতানগঞ্জ এলাকায় বিপুল মানুষের সমাগম হয়। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, এই পথ চালুর ফলে স্থানীয়ভাবে ছোট-বড় ব্যবসার প্রসার ঘটবে। মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে যাবতীয় কাজ শেষ হয়েছে। পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য তৈরি করা হচ্ছে রাস্তা। পল্টুনও তৈরি হয়েছে। নৌঘাটের শেড তৈরি করা হয়েছে।

উদ্বোধনের পর স্থানীয় সুলতানগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম সচিব মো. সেলিম ফকির।

রাজশাহী–মুর্শিদাবাদ নৌপথের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা। আজ সোমবার গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ এলাকায়

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক সময় ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার ময়া এলাকা থেকে গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ পর্যন্ত পণ্য আনা-নেওয়া হতো। বাংলাদেশ থেকে পাঠানো হতো পাট ও মাছ। ভারত থেকে আসত বিভিন্ন পণ্য। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় এটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৫৯ বছর পর তা আবার শুরু হচ্ছে নৌপথ। প্রাথমিক পর্যায়ে এই পথে ভারত থেকে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল, পাথর, মার্বেল, খনিজ বালু ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী বাংলাদেশে আসবে। বাংলাদেশ থেকে বস্ত্র, মাছ, পাট ও পাটজাত পণ্য ছাড়াও বিভিন্ন কৃষিপণ্য ভারতে যাবে।

তবে রাজশাহী থেকে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার নৌপথের অনুমোদন থাকলেও পদ্মার নাব্যতা সংকটের কারণে সুলতানগঞ্জ থেকে মুর্শিদাবাদের ময়া পর্যন্ত আড়াআড়িভাবে ২০ কিলোমিটার পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া হবে।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here