অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াত দেশে জ্বালাও-পোড়াও চালাচ্ছে এমন অভিযোগ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, তাদের এ কর্মকাণ্ড কেউ সমর্থন করতে পারে না।
রোববার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিরোধীদলের জ্বালাও-পোড়াও, প্রাণহানি, সম্পদ নষ্ট নিয়ে জাতিসংঘ থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাদের ভাষা ছিল এমন যে এটা তাদের (বিএনপি) করার অধিকার আছে। দাবি আদায়ের অধিকার হিসেবে জাতিসংঘ এটিকে অভিহিত করছে।
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রথমত জ্বালাও-পোড়াওয়ের অধিকার আছে বলে জাতিসংঘ বলেছে, এটা আমি মনে করি না। জাতিসংঘ এটা বলেনি। আন্দোলন করার অধিকার আছে। সরকারের পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার আছে। আমার পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার আছে। সেই অধিকার সবার আছে। কিন্তু সেটা মানে এই নয় যে গাড়িঘোড়া পোড়ানো। এটিকে কেউ সমর্থন করেনি।
তিনি বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনেক সদস্য তাদের (বিএনপি-জামায়াত) এ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। আরও অনেকে নিন্দা জানিয়েছে। বিএনপি নানাভাবে অনেককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ড কেউ সমর্থন করেনি, করতে পারে না।
এ সময়ে মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরের কারণে সামুদ্রিক বাণিজ্যের দুয়ার ও সম্ভাবনা খুলে গেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর হবে। এটি ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি, হয়নি। এবার সত্যিকার অর্থে গভীর সমুদ্র বন্দর মাতারবাড়িতে হয়েছে। এটি আমাদের সামুদ্রিক বাণিজ্যের বিশাল দুয়ার খুলে দিয়েছে। সেখানকার পুরো এলাকা বদলে গেছে। কক্সবাজার শহর বদলে গেছে। এভাবে দেশের প্রতিটি শহর ও গ্রাম বদলে গেছে। মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরেরই একটি অংশ। গতকালকের অনুষ্ঠান চট্টগ্রাম বন্দরের আয়োজনেই হয়েছে জানান তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন, তখন দেশ ধ্বংসের জন্য পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে জনগণের ওপর। তারা কোনো উন্নয়ন দেখতে পান না। এই ধ্বংস ও পেট্রোল বোমার বিরুদ্ধে সবাই মিলে সোচ্চার হলে আমি মনে করি, এগুলো বন্ধ হবে।
তিনি আরও জানান, অবরোধের নামে আগের রাত থেকে গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে। আজ অবরোধ ডাকলে, গতকালই শুরু হয় গাড়ি পোড়ানো। মানুষ ভেবেছিল যেহেতু রোববার থেকে অবরোধ সেহেতু আজ গাড়ির ওপর বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা হামলা চালাবে না। কিন্তু শনিবার থেকেই তা শুরু হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি এটি হতে পারে না। এগুলোকে শুধু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বললে কম হবে। মানুষের সহায়-সম্পত্তিতে চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হচ্ছে। একটি গাড়ি পোড়ানো মানে একটি পরিবারকে পুড়িয়ে দেয়া। একটি পরিবারের স্বপ্ন পুড়িয়ে দিয়ে তাদের স্বপ্নকে পথে বসানো হচ্ছে। যারা রাজনীতি করেন, তারা এ কাজ করতে পারেন না। হ্যাঁ, তারা রাস্তায় নেমে এসে ব্যারিকেড দিক, মানুষকে বলুক—আমরা অবরোধ ডেকেছি, আপনারা পালন করুন। সেটি তো তারা করে না।
প্রসঙ্গত: সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষের পর বিএনপির হরতালের পর একে একে চতুর্থ দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছে তারা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে পরবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে সমমনা জোট ও দল এ কর্মসূচি পালন করছে।