সুবর্ণবার্তা প্রতিনিধিঃ নোয়াখালী সুবর্ণচরে কলেজের ক্লাস চলাকালীন সময়ে কলেজ হোস্টেলে প্রাইভেট পড়ার সময় অধ্যক্ষের তোপের মুখে পড়লেন এক শ্রেণি শিক্ষক।
সে সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ডিগ্রী কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মো. রফিক উল্লাহ। এমপিওভুক্ত ও সরকারি কোন শিক্ষক প্রাইভেট পড়াতে পারবে না সরকারের এমন নীতিমালা থাকলেও তোয়াক্কা না করে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকালে উপজেলার চরজব্বর ডিগ্রি কলেজে ক্লাস চলাকালীন সময়ে কলেজের ছাত্র হোস্টেলে প্রাইভেট পড়ার সময় রফিকুল উল্লাহ নামের ঐ শিক্ষককে হুশিয়ার করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিন।
কলেজের ৯:৪৫ মিনিট থেকে ক্লাস চলার নির্ধারিত সময় সূচি থাকলেও বেলা সাড়ে ১০ টায় তাকে প্রাইভেট পড়ানোর সময় অধ্যক্ষ হুশিয়ার করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা দূরবর্তী জায়গা থেকে এখানে পড়তে এসেছি। দূর থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজ হোস্টেল বরাদ্দ থাকলেও সেখানে আমাদের সুযোগ না দিয়ে প্রতিষ্ঠানের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক রফিক উল্লাহ স্যার হোস্টেল দখল করে রাখেন। এবং তিনি ব্যাচ ভিত্তিক দিনে-রাতে ধাপে ধাপে প্রাইভেট পড়ান।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, তার কাছে প্রাইভেট না পড়লে তিনি টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিবেন বলে বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি প্রদান করেন। এছাড়াও একাধিক শিক্ষার্থীরা বেশ কিছুদিন ধরে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করে আসছে।
এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এক শিক্ষার্থী কমেন্টে মন্তব্য করেন, তখন বৃষ্টি থাকায় প্রিন্সিপাল স্যার কলেজে প্রবেশ করতে সমস্যা হওয়ায় একটি ছাতা নিয়ে স্যারের মাথায় ধরে কলেজে দিয়ে আসছিলাম। অধ্যক্ষ স্যার কলেজ হোস্টেল বরাবর গেলে তখন বেলায়েত স্যার ও অন্য একজন স্যারসহ হোস্টেলের সামনে দাড়িয়ে আছেন। তখন অধ্যক্ষ স্যার বেলায়েত স্যারকে উচ্চ স্বরে বলতে লাগলো রফিক স্যার ক্লাস টাইম প্রাইভেট পড়ায় কেনো ইত্যাদি। তার পর অধ্যক্ষ স্যার অফিসের দিকে জোরে হাটা শুরু করলো। বেলায়েত স্যার পিছন থেকে বুঝানোর চেষ্টা করলো, প্রিন্সিপাল স্যার রেগে অফিসে চলে গেলেন।
অনেক অভিভাবক বিষয়টিকে নেতিবাচক বলে মনে করছেন। তারা মনে করেন শিক্ষক ক্লাসে না পড়িয়ে ক্লাস সময়ে প্রাইভেট পড়ানো অপরাধের সমান। এ বিষয়ে তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক মো. রফিক উল্লাহ জানান, আমি এ কলেজে চাকরি করি ২০০০ সাল থেকে। নিজ বাসা কুমিল্লা হওয়ায় ২১ বছর যাবৎ কলেজ হোস্টেলে থাকি। প্রাইভেট পড়ার বিষয়টি সম্পন্ন ভিত্তিহীন বলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। সরকার বাসা ভাড়া বহন করলেও কেন কলেজ হোস্টেলে থাকেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেন নি।
এ বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিন ফরহাদের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। এবং কলেজে গিয়ে সরাসরি কথা বলার জন্য বলে থাকেন।