নিষেধাজ্ঞার কোনো ভয় নেই, এগুলো জুজু: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

0
83

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিএনপি বড় রাজনৈতিক দল হলে নির্বাচনে এসে প্রমাণ করুক তারা বড়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে কেউ বাধা দিতে পারবে না। যারা বাধা দেবে তাদের শাস্তি দেয়া হবে। নিষেধাজ্ঞার কোনো ভয় নেই, এগুলো জুজুর ভয়।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিষেধাজ্ঞার কোনো ভয় নাই, এগুলো জুজুর ভয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে, কেউ বাধা দিতে পারবে না। যারা বাধা দেবে তাদের আমরা শাস্তি দেব। বিএনপি বড় রাজনৈতিক দল হলে নির্বাচনে এসে প্রমাণ করুক; তারা বড় দল।’

এ সময় ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। গাজায় এত মানুষ মারা যাচ্ছে; তারা তা দেখছে না। আর বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের যে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ জানিয়েছেন; তারা আসলে ঘুমাচ্ছেন। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের দ্বিমুখী অবস্থান গ্রহণযোগ্য নয়।

এদিকে ঢাকা সফররত ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, নতুন সরকার গঠনে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধিদল আশাবাদ ব্যক্ত করেছে, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠন হবে, জানান পররাষ্ট্র সচিব।
আরও পড়ুন: তফসিলের আগে ইসিতে চূড়ান্ত বৈঠক

এ বিষয়ে প্রতিনিধি দলকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, নির্বাচন নিয়ে বলেছি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে পরিবেশ দরকার, তা আছে। তফসিল ঘোষণা হবে এবং তারপরে আমরা আশা করছি, সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে।

তিনি আরও বলেন, মানবাধিকারের যে সাধারণ বিষয়গুলো আছে- যেমন সমাবেশ করার স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা, মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা, যথেচ্ছ ধরপাকড়- এ ধরনের যে সব বিষয় আছে সেগুলো ইউপিআর (ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ)-এ আলোচনা হয়েছে। সে আলোকে আমরা প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছি।

বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ইইউ প্রতিনিধি দল জানায়, বাংলাদেশের শ্রম ও মানবাধিকার উভয়ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক চুক্তি মেনে চলা প্রয়োজন। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা রক্ষা করা এবং সুশীল সমাজের কার্যক্রম পরিচালনার সহায়ক পরিবেশ তৈরির তাগিদ দিয়েছে প্রতিনিধি দল।

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন ঠিক করতে বৈঠকে বসেছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অফিস কক্ষে এ বৈঠক হচ্ছে। এই বৈঠকে ভোটগ্রহণের কয়েকটি সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে কথা হবে। এরমধ্য থেকেই তারিখ নির্ধারণ হবে। এছাড়া নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই ও প্রত্যাহারের শেষ দিন নিয়েও কথা হবে বলে জানা গেছে।

সন্ধ্যা ৭টার পর বিটিভিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণা দেবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। সকালে এক ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব জানান, নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ আছে বলেই তফসিল দেয়া হচ্ছে।

সংবিধান মতে, পহেলা নভেম্বর থেকেই শুরু হয়েছে নির্বাচন কমিশনের ক্ষণগণনা। ডেডলাইন ২৯ জানুয়ারি। অর্থাৎ জানুয়ারির শুরু থেকে যেকোনো সময় তফসিল দিতে পারবে কমিশন। চলতি সংসদের পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিন অর্থাৎ ভোট হতে হবে ২৯ জানুয়ারির মধ্যেই।

ভোটের প্রস্তুতিতে আগেই রোডম্যাপ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই অনুসারে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সীমানা পুনঃনির্ধারণ, অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ, ব্যালট বাদে ভোটের বাকি সরঞ্জাম জেলায় জেলায় পৌঁছে দেয়াসহ সব কাজ সেরেছে নির্ধারিত সময়ে।

রেওয়াজ অনুযায়ী ৯ নভেম্বর বঙ্গভবনে ভোটের সব শেষ প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেছে কমিশন। এখন কেবল বাকি তফসিল ঘোষণার।

এদিকে বিকেলে বৈঠক, জাতির উদ্দেশে সিইসির ভাষণ ও তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আগারগাঁও নির্বাচন কমিশনের আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Facebook Comments Box
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here